তথ্যমন্ত্রী জানালেন

গণমাধ্যমকর্মী ও সম্প্রচার আইন সংসদের আগামী অধিবেশনে উঠছে

Looks like you've blocked notifications!
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন ও জাতীয় সম্প্রচার আইন জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে। এরই মধ্যে আইন দুটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে। এই আইন দুটি পাস হলে সাংবাদিকদের চাকরির নিশ্চয়তা ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা নিশ্চিত হবে। আর আইন অনুযায়ী বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে দেওয়া হবে না।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

সাংবাদিক প্রতিনিধিরা ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটালাইজেশন, বিদেশি চ্যানেল ডাউনলিংক ফি বাড়ানো, বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ, দেশি চ্যানেলগুলো পে-চ্যানেল করা, সংবাদকর্মীদের চাকরির সুরক্ষা দিতে গণমাধ্যমকর্মী আইন ও সম্প্রচার আইন দ্রুত সংসদে পাস করে বাস্তবায়নের দাবি জানান।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছরের মধ্যেই সব সিটি করপোরেশন এলাকায় ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল করতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন বন্ধে শিগগিরই একটি চূড়ান্ত সময়সীমা দেওয়া হবে। এরপর আইন ভঙ্গ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদেশি চ্যানেলের ল্যান্ডিং ফি যৌক্তিক পর্যায়ে নেওয়ারও আশ্বাস দেন মন্ত্রী।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন এবং সম্প্রচার আইন দুটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এখন আইন মন্ত্রণালয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে। এরপরই এটি জাতীয় সংসদের আসন্ন অধিবেশনে পাস করার জন্য উপস্থাপন করা হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা গণমধ্যমের স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। এ কারণেই গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার এ দুটি আইন করছে। তিনি সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কোনো টিভি চ্যানেল বন্ধ করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়, সম্প্রচারের ক্ষেত্রে দেশের আইন মানতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘ডাউনলিংক করা বিদেশি চ্যানেলে বেআইনিভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার শুধু বাংলাদেশে নয়, সব দেশেই আইনত নিষিদ্ধ। দীর্ঘদিন ধরে এ খাতে আইনভঙ্গের রীতি ও বিশৃঙ্খলতা চলে এলেও আমরা একে নিয়মের মধ্যে আনার বিষয়ে আন্তরিক। ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারকে এ বিষয়ে সহায়ক ভূমিকা পালনের জন্য ধন্যবাদ।’

তথ্যমন্ত্রী সভায় জানান, ‘বিদেশি চ্যানেলগুলোর ক্লিনফিড (বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার) চালাবার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় যে দুটি বিদেশি চ্যানেল বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দিয়েছিল, তারা প্রাথমিক জবাব দিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম জানানোর জন্য ১৫ দিন সময় চেয়েছিল। সে মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি। তবে মনে রাখতে হবে, আইন বলবৎ করতে কাউকে অনির্দিষ্টকাল সময় দেওয়া হবে না।’

‘ক্যাবল অপারেটরদেরও এ বছরের শেষ নাগাদ ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে’ উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

গুগল, ইউটিউব, নেটফ্লিক্স প্রভৃতি অনলাইন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারও ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিয়মের মধ্যে আনা হবে, বলেন ড. হাছান মাহমুদ।

ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে এ সময় মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতে বিদেশি চ্যানেল ডাউনলিংক করার ফিসের সমতা আনতেও সরকার সচেষ্ট হবে।

ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের আহ্বায়ক রেজওয়ানুল হক রাজা, সাংবাদিক শাকিল আহমেদ, মানস ঘোষ, সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, রাশেদ আহমেদ, রাহুল রাহা, মামুনুর রহমান খান, দীপ আজাদ, সাইফুল ইসলাম দিলাল, মোহাম্মদ নূর সাফা জুলহাস, ফাহিম উদ্দীন, নজরুল কবীর, মো. হারুন-অর-রশীদ তালুকদার প্রমুখ এ সময় অবিলম্বে বিদেশি চ্যানেলে বেআইনিভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ, টিভি চ্যানেলে গণমাধ্যমকর্মী ছাঁটাই বন্ধের লক্ষ্যে গণমাধ্যমকর্মী আইন ও সম্প্রচার আইন দ্রুত বাস্তবায়ন, এশিয়া মিডিয়া সামিট আয়োজনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তা ও চাকরিচ্যুত গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য আপৎকালীনভাতা বরাদ্দের অনুরোধ জানান। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান-উল-আলম সভায় উপস্থিত ছিলেন।