উবারে প্রাণ হারানো লাবণ্যও বাইক চালানো শিখেছিলেন! ভিডিও দেখুন

Looks like you've blocked notifications!
চার মাস আগে মোটরসাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতা ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ছাত্রী ফাহমিদা হক লাবণ্য। ছবি : ফেসবুক

চার মাস আগে নিজেই মোটরসাইকেল চালানো শিখেছিলেন। সেই ভিডিও করে শেয়ারও করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লিখেছিলেন, এটা সহজ কাজ। আর সেই মোটরসাইকেলেই প্রাণ হারালেন রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাহমিদা হক লাবণ্য।

পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় অ্যাপভিত্তিক মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং সেবা ‘উবার মোটো’তে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন লাবণ্য। এ সময় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসংলগ্ন রাস্তায় পিকআপভ্যানের চাপায় নিহত হন তিনি।

এ দুর্ঘটনার পর ফাহমিদা হক লাবণ্য ফেসবুক পেজটি ‘রিমেম্বারিং’ করা হয়। সেই পেজে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর মোটরসাইকেল চালানোর ভিডিওটা পোস্ট করেন লাবণ্য। ওপরে লেখা ছিল, ‘ওয়েল.. দ্যাট ওয়াজ ইজি।’

লাবণ্য সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর অনেকেই এখন তাঁর ফেসবুক পেজে গিয়ে সেই ৪৮ সেকেন্ডের ভিডিওটা শেয়ার দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে ফুলবাড়িয়া উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলশিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেনও একজন।

সেখানে অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন, পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছেন। দেশে সড়ক দুর্ঘটনা মহামারি আকার ধারণ করছে বলেও কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেউ বা অভিযোগ করেছেন, চালকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না থাকার কারণেই এ ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয়ে লাবণ্যদের প্রতিনিয়ত হারিয়ে যেতে হচ্ছে।   

মোয়াজ্জেম হোসেন আজ দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, লাবণ্য ফুলবাড়ীয়া উপজেলার হরিপুর গ্রামের ইমদাদুল হকের মেয়ে। তাঁদের পরিবার ঢাকায় থাকে। বছরের বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠানের সময় তাঁরা গ্রামের বাড়ি আসতেন।

আজ শুক্রবার ভোরে উপজেলার হেমায়েতপুরে নানার কবরের পাশেই তাঁকে দাফন করা হয়েছে বলে জানান মোয়াজ্জেম। মোটরসাইকেল চালানো শেখার ভিডিওটা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে মাঠে লাবণ্য মোটরসাইকেল চালানো শিখছেন, সেটা উপজেলার গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলটি লাবণ্যর পৈতৃক গ্রাম হরিপুরের পাশের গ্রাম।’     

দুর্ঘটনায় লাবণ্যর মৃত্যু সম্পর্কে গতকাল বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সি জানান, শ্যামলীর বাসা থেকে একটি মোটরসাইকেলে করে লাবণ্য ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছিলেন। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পাশের রাস্তায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওই মোটরসাইকেল। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন লাবণ্য।

তবে লাবণ্যর এক বন্ধু ফেসবুকে জানিয়েছেন, লাবণ্য ‘উবার মোটো’তে (অ্যাপভিত্তিক সেবা) করে বিশ্ববিদ্যালয় যাচ্ছিলেন। একটি পিকআপভ্যানের চাপায় নিহত হন তিনি। মোটরসাইকেল ও পিকআপভ্যানের চালক পলাতক।

শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম জানান, নিহত লাবণ্যর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে জানা যায়, ‘উবার মোটো’ সেবা ব্যবহার করছিলেন তিনি।