প্রেমিকের অস্বীকৃতি, বখাটেদের নিপীড়ন, এরপর ‘আত্মহত্যা’

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার কলেজছাত্রী তানিয়া বেগম। ছবি : সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় তানিয়া বেগম (২৩) নামের এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিয়েতে প্রেমিকের অস্বীকৃতি এবং এরপর বখাটেদের নির্যাতন ও নিপীড়নের মুখে তানিয়া আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ শনিবার সকালে উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যেরচর গ্রামের বাড়ি থেকে তানিয়ার গলায় ওড়না পেঁচানো লাশ উদ্ধার করা হয়।

তানিয়া মধ্যেরচর মীরবাড়ির মিলন মীরের মেয়ে। তিনি স্থানীয় জিল্লুর রহমান সরকারি মহিলা অনার্স কলেজের স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তানিয়া পড়াশোনার পাশাপাশি পৌর শহরের স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার সাজেদা আলাল হাসপাতালে চাকরি করতেন। সেখানকার ফার্মেসিতে চাকরি করতেন উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমান। একই প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাধে তানিয়া-মিজানের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার কলেজছাত্রী তানিয়ার মা শেফালি বেগমের আহাজারি। ছবি : এনটিভি

গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রেমিক মিজানুর রহমান প্রেমিকা তানিয়ার সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাড়িতে যান। বিষয়টি প্রতিবেশীদের নজরে পড়লে তারা মিজানকে আটক করেন। পরদিন শুক্রবার সকালে মিজানের অভিভাবকদের নিয়ে সালিশে বসেন প্রতিবেশীরা। এ সময় তানিয়ার অভিভাবকরা তানিয়াকে বিয়ে করতে চাপ সৃষ্টি করলে তাতে অস্বীকৃতি জানান মিজান। এ সময় সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে কৌশলে মিজানকে ছাড়িয়ে দেন সালিশকারীদের কয়েকজন।

পরে এলাকার কয়েকজন বখাটে যুবক শুক্রবার দিনে ও রাতভর তানিয়াসহ পরিবারের লোকজনকে নানাভাবে অপমান করে। অশ্লীল কথা বলে এবং ঘরে ইটপাটকেল ছুড়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। ফের আজ শনিবার সকালে বাড়িতে গিয়ে নানা রকমের অশ্লীল কথাবার্তা বলতে থাকে এবং তানিয়া ও ওর মা শেফালি বেগমকে ঘর থেকে টেনে বের করে আনার চেষ্টা করে।

এইসব অপমান সহ্য করতে না পেরে বেলা ১১টার দিকে তানিয়া নিজঘরে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে ভৈরব থেকে পুলিশ গিয়ে লাশ নামিয়ে থানায় নিয়ে আসে।

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যেরচর গ্রামে তানিয়াদের বাড়িতে সাদা স্ট্যাম্পে সই করেন প্রেমিক মিজান। ছবি : সংগৃহীত

তানিয়ার মা শেফালি বেগম অভিযুক্ত কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে প্রলাপ বকছিলেন এবং বার বার মূর্চ্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি এ সময় প্রতারক প্রেমিক মিজান ও প্রতিবেশী বখাটেদের বিচার দাবি করেন।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখরেছুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কিশোরগঞ্জে পাঠানো পাঠানো হবে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।