টাঙ্গাইল-৪ উপনির্বাচনে ৩ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপনির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দুই নেতাসহ তিনজন আজ বুধবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। আজ বুধবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে তাঁরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
এঁরা হলেন জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) সাদেক সিদ্দিকী এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দুই প্রার্থী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সিদ্দিকী ও হাসমত আলী। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলিমুজ্জামান তা গ্রহণ করেন।
এর ফলে উপনির্বাচনে টিকে রইলেন পাঁচজন। তাঁরা হলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী, তাঁর স্ত্রী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, বিএনএফের প্রার্থী আতাউর রহমান খান ও এনটিপি পার্টির ইমরুল কায়েস।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। ভোটগ্রহণ হবে ১০ নভেম্বর।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপনির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী, তাঁর স্ত্রীসহ ১০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আজ রোববার ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন।
বেলা ৩টার দিকে কাদের সিদ্দিকীর পক্ষে তাঁর স্ত্রী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী নেতা-কর্মীদের নিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। একই সঙ্গে নাসরিন কাদের সিদ্দিকী তাঁর নিজের মনোনয়নপত্রও দাখিল করেন। পরে দলের অপর দুই প্রার্থী ইকবাল হোসেন সিদ্দিকী ও হাসমত আলী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন কাদের সিদ্দিকীর ভাই সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকী। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.), তাবলিগ জামাত ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় প্রথমে মন্ত্রিসভা, পরে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে। ১ সেপ্টেম্বর লতিফ সিদ্দিকী সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করলে তাঁর আসন শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
উপনির্বাচনে অংশ নিতে গত ১১ অক্টোবর কাদের সিদ্দিকী, তাঁর স্ত্রীসহ ১০ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। ১৩ অক্টোবর মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে কাদের সিদ্দিকী, তাঁর স্ত্রী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টির মুস্তাক হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল আলীমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে কাদের সিদ্দিকী ও তাঁর স্ত্রী ১৬ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। কমিশন ১৮ অক্টোবর শুনানি শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত বহাল রাখে।
এই মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কাদের সিদ্দিকী ও তাঁর স্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টে রিট করেন। রিট আবেদনে বলা হয়, ঋণখেলাপির অভিযোগে তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা অবৈধ। কেননা, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পুনঃতফসিল করায় তাঁরা ঋণখেলাপির অন্তর্ভুক্ত হননি।
আজ বুধবার বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি ইজারুল হক আকন্দের অবকাশকালীন বেঞ্চ নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে তা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তাঁদের মনোনয়নপত্র কেন বৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রুলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।