মির্জা ফখরুলের আসন শূন্য ঘোষণা

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল সোমবার নির্ধারিত সময়ে শপথ না নেওয়ায় বগুড়া-৬ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিষয়টি সংসদকে জানান।

স্পিকার বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে ৯০ দিনের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শপথ নেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি প্রথম বৈঠকের ৯০ দিনের মধ্যে শপথ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাই তাঁর আসন শূন্য হয়ে গেছে।

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মির্জা ফখরুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও-১ ও বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচন করেন। এর মধ্যে বগুড়া-৬ আসনে তিনি নির্বাচিত হন।

বিএনপি এই নির্বাচনে ছয়টি আসনে জয়ী হয়। এর মধ্যে পাঁচজন সাংসদ শপথ নিয়েছেন।

এদিকে শপথ নেওয়ার ব্যাপারে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে কোনো চিঠি দেননি বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় ফখরুল বলেন, ‘স্পিকারের কাছে কোনো সময় চাইনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, কিছু কিছু পত্রিকা লিখেছে, আমি শপথের জন্য সময় চেয়েছি। একটি পত্রিকা লিখেছে, আমি আজ শপথ গ্রহণ করব।’তিনি বলেন, ‘এটা সাংবাদিকতার এথিক্সের মধ্যে পড়ে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যে শপথ নিয়েছি, এর জন্য অনেকে অনেক মন্তব্য করেছেন। কিন্তু সময়ই প্রমাণ করবে, শপথ নেওয়াটা সঠিক সিদ্ধান্ত কি না। আগে আমরা শপথ নিইনি, তার মানে এখন নেব না, তা তো হতে পারে না। আজকে যে শপথ নিয়েছি, সেটা ভয়াবহ দানবকে পরাজিত করার জন্যই নিয়েছি।’

বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘সবাই শপথ নিয়েছে, কিন্তু আমি শপথ নিইনি। এটা আমাদের দলের সিদ্ধান্ত। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু হয়নি।’

সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা করিনি দাবি করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া সমঝোতা করলে অনেক আগেই তিনি এ দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকতেন। আমরা কোনো বিদেশির পরামর্শে কিছু করিনি। আমরা চলমান রাজনীতি দেখছি। এগুলো বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এ ছাড়া স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীও আজ জাতীয় সংসদে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে শপথ নেওয়ার সময় বাড়ানোর বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কোনো চিঠি তিনি এখনো পাননি।

স্পিকার বলেছেন, ‘যদি তাঁর (মির্জা ফখরুল) চিঠি ২৯ এপ্রিলের মধ্যে সংসদ সচিবালয়ে এসে পৌঁছে থাকে তাহলে তা গ্রহণ করা হবে।’

ড. শিরীন শারমিন বলেন, ‘যদি ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ফখরুল ইসলাম চিঠি না পাঠিয়ে থাকেন তাহলে সংবিধান অনুযায়ী তাঁর সংসদীয় আসনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ গঠিত হয়। গত ৩০ জানুয়ারি সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে।

সংবিধানের ৬৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সংসদের কোনো এমপি শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করতে ও শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে অসমর্থ হলে তাঁর আসন শূন্য হবে। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ মেয়াদ অতিবাহিত হওয়ার আগে স্পিকার যথার্থ কারণে তা বর্ধিত করতে পারবেন।