সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় প্রস্তুতি

Looks like you've blocked notifications!
বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি : এনটিভি

ঘূর্ণিঝড় ফণীর সম্ভাব্য আঘাত মোকাবিলায় সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এই দুর্যোগের সম্ভাব্য আঘাত হানার বিষয়ে জনগণকে আগাম সতর্ক করা হয়েছে। জেলার তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালীগঞ্জে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে এরই মধ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে। অপর চারটি উপজেলায়ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় জেলা প্রশাসক জানান, জেলার ১৩৭ টি সরকারি সাইক্লোন সেন্টার এবং বেসরকারি পর্যায়ের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ইউনিয়ন পরিষদ, কমিউনিটি সেন্টার দুর্যোগ কবলিত জনগণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নদী ও সমুদ্রে থাকা মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আশাশুনি ও শ্যামনগরে  ৩ হাজার ৬৫৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। এসব উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সতর্ক সংকেত হিসেবে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল আরো জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ১১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রক্ষায় সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব এলাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে এক বা একাধিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের হাতে পর্যাপ্ত ওষুধ খাবার স্যালাইন মজুদ রাখা হয়েছে। জলযান ও স্থলযান, শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা এবং উদ্ধার কাজ পরিচালনায় ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি, রেড ক্রিসেন্ট, স্কুল-কলেজের স্কাউট টিম এবং স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও পুলিশ সদস্যদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধি ও তাদের সহযোগী কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী, গর্ভবতী মা, রোগগ্রস্ত মানুষ এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের উদ্ধারে অতি সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জানান, জনগণের জানমালের পাশাপাশি গবাদি পশুর জীবন রক্ষায় উঁচু জায়গার ব্যবস্থা করা  হয়েছে। কাছাকাছি যাতে পশু খাদ্য মেলে সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সতর্কতা প্রচারের জন্য পাড়ায় পাড়ায় মসজিদের মাইক ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা সদর এবং সব উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

সাতক্ষীরার মাঠভরা পাকাধান সম্ভব হলে দুই দিনের মধ্যে কেটে নেওয়ার জন্য কৃষি বিভাগের মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলাগুলোর নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) ফণীর সম্ভাব্য আঘাত মোকাবিলায় পৃথক পৃথক সভা করেছেন।