শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কাজ করছে না সুবীর নন্দীর
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের এমআইসিইউতে চিকিৎসাধীন সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটপূর্ণ। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কাজ করছে না বলে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা।
সুবীর নন্দীর চিকিৎসার বিষয়টি বাংলাদেশে সমন্বয় করেছেন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক সামন্তলাল সেন। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি।
আজ সোমবার এনটিভি অনলাইনকে সামন্তলাল সেন বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে চিকিৎসকদের সঙ্গে আজ সকালে আমার কথা হয়েছে। তারা বলেছে, সুবীর নন্দীর কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ঠিকমতো কাজ করছে না। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। সবাই সুবীর নন্দীর জন্য দোয়া করবেন। ’
সামন্তলাল সেন আরো বলেন, ‘শনিবার এবং গতকাল রোববারও সুবীর নন্দীর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। পরপর দুদিন হার্ট অ্যাটাক চিন্তার বিষয়। তাঁর হার্টে চারটা স্ট্যান্ট পরানো হয়েছে। এই নিয়ে তিনবার হার্ট অ্যাটাক হলো সুবীর নন্দীর। এর আগে ২০১৩ সালে সুবীর নন্দীর ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল। সুবীর নন্দীর সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক আমার। আমার নিজেরও সুবীরের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে।’
টানা ১৮ দিন অজ্ঞান থাকার পর সুবীর নন্দী চোখ খোলেন গত শুক্রবার। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন থাকার সময় গত ৩০ এপ্রিল সুবীর নন্দীকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস, কিডনি ও হৃদরোগে ভুগছেন সুবীর নন্দী।
গত ১২ এপ্রিল শ্রীমঙ্গলে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন সুবীর নন্দী ও তাঁর পরিবার। পয়লা বৈশাখে শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকা ফেরার পথে উত্তরায় কাছাকাছি আসতেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে সুবীর নন্দীর। এর পর সেখান থেকে সরাসরি সিএমএইচে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পরই তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল।
দেশের জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পীর ১৯৮১ সালে প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ প্রকাশিত হয়। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে প্রথম প্লে-ব্যাক করেন তিনি। দীর্ঘ ৪০ বছরের সংগীত ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারের বেশি গান গেয়েছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচবার। সংগীতে অবদানের জন্য এ বছর তিনি পান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক।
সুবীর নন্দীর গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো—‘ও আমার উড়াল পঙ্খী রে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘চাঁদে কলঙ্ক আছে যেমন’, ‘বধূ তোমার আমার এই যে পিরিতি’, ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আশা ছিল মনে মনে’ ইত্যাদি।