স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে খুন হন প্রবাসী
স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রতিবেশী শামীমের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছিলেন খাদিজা খাতুন গোলাপী। গোলাপীর বাবা গোলজার হোসেন গোলাই ও মা ভানু বেগম বিষয়টি মেনে নিয়েছিলেন। তাঁরা মেয়ের অপকর্মকে কখনো বাধা দেননি। বরং তাদের সায় ছিল। গোলাপীর সৌদি আরব প্রবাসী স্বামী আবদুল আওয়াল তাদের বাড়ি এলে সবাই মিলে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
সে অনুযায়ী শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার কথা প্রচার করা হয়। পাঁচ মাস পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ঘটনাটি আত্মহত্যা নয় বরং পরকীয়ার কারণে পরিকল্পিত হত্যা বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
পিবিআই পাবনার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সবুজ হোসেন আজ রোববার সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
এসআই সবুজ হোসেন জানান, পরকীয়ার জের ধরে খাদিজা খাতুন গোলাপীর প্রবাসী স্বামী আবদুল আওয়ালকে খুন করা হয়। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর পিবিআইয়ের তদন্তে হত্যা রহস্যের উন্মোচিত হয়। পরে শনিবার সকালে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রাম থেকে এ ঘটনায় জড়িত আওয়ালের স্ত্রী খাদিজা বেগম গোলাপী (২৮), শ্বশুর গোলজার হোসেন গোলাই (৬৫) ও শাশুড়ি ভানু বেগমকে (৫৬) গ্রেপ্তার করলে তারা পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করে।
এসআই সবুজ জানান, পরকীয়ার জের ধরে ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে প্রবাসী আবদুল আওয়াল সাঁথিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে খুন হন। খাদিজার প্রেমিক শামীমসহ মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
নিহত আবদুল আওয়ালের বাবা তোফাজ্জল হোসেন জানান, তাঁর ছেলে সৌদি আরবে থাকতেন। তাঁর পুত্রবধূ খাদিজা বেগম গোলাপী এ সুযোগে শামীম হোসেন নামের এক ছেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। ২০১৮ সলের ১০ ডিসেম্বর তাঁর ছেলে বাড়ি আসেন এবং ১৬ ডিসেম্বর শ্বশুরবাড়িতে যান। ওই দিনই তাঁর পুত্রবধূ, পুত্রবধূর প্রেমিক ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে তার ছেলেকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য তার মরদেহ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।
এ ঘটনায় বাদী হয়ে প্রথমে আতাইকুলা থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা। কিন্তু মামলার তদন্ত সঠিক না হওয়ায় তিনি মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তরের আবেদন জানান। পরে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে পিবিআই নতুন করে তদন্ত শুরু করে। অবশেষে হত্যাকাণ্ডে রহস্য উন্মোচিত হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পাবনার এসআই সবুজ বলেন, দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার প্রবাসী হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। শনিবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।