আগুনে পুড়ল কলসিন্দুরের ফুটবলারদের অর্জন
মেয়েদের ফুটবলের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা একটি নাম কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ওই স্কুলের ছাত্রী মারিয়া, সানজিদারা আজ বিশ্ব ফুটবল মাতাচ্ছেন। ওই স্কুল থেকেই উঠে এসেছেন একের পর এক ফুটবলার।
সেই স্কুলটিকে দেখতে হলো আগুনের বিভীষিকা। স্কুলটির অফিসকক্ষে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ কাগজ আর ফুটবল খেলে মেয়েদের অর্জন করা মেডেল আর সনদগুলো।
আজ মঙ্গলবার ভোরে দুর্বৃত্তরা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্কুলটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই আগুনে স্কুলটির শিক্ষকদের সনদপত্র, মেয়েদের খেলার সনদপত্র, মেডেল বই, কারিগরি শাখার কাগজপত্রসহ প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে গেছে। এ ছাড়া একটি ‘পেনড্রাইভ’ নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
স্কুলের শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, মঙ্গলবার ভোরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক উজ্জ্বল বিশেষ ক্লাসের জন্য স্কুলে গিয়ে দেখেন অফিস কক্ষে আগুন জ্বলছে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্কুলের অন্য শিক্ষকরাও উপস্থিত হন। খবর পেয়ে ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিকুজ্জামান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহাম্মদ মোল্লা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রতন মিয়া বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র নিয়ে কেলেঙ্কারির দায়ে একজন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে তেমন কোনো সমস্যা নেই।’
প্রধান শিক্ষক রতন মিয়া আরো বলেন, ‘নারী ফুটবলারদের সৌজন্যে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বিদ্যালয়টি সরকারি হওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’ স্কুলটির শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়টি সরকারীকরণের কাজে বাধা সৃষ্টি করার জন্যই কেউ এমন কাজ করে থাকতে পারে।’
অফিসকক্ষে আগুন দিলেও বিদ্যালয়ের ফটকে তালা লাগানো ছিল। পুলিশের ধারণা দেয়াল টপকে অফিসে প্রবেশ করে আগুন দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ধোবাউড়া থানার ওসি আলী আহাম্মদ মোল্লা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে একটি লিখিত দরখাস্ত করার জন্য। দরখাস্ত পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিগত কয়েক বছরে দেশের বয়সভিত্তিক ফুটবলে ওই স্কুল একচেটিয়া সাফল্য অর্জন করেছে। স্কুলটির মেয়েরা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা গোল্ডকাপ ফুটবলে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হয়। বয়সভিত্তিক বিভিন্ন জাতীয় দলে কলসিন্দুর স্কুলের মেয়েদের প্রাধাণ্য চোখে পড়ার মতো।