নার্সকে গণধর্ষণ ও হত্যায় হেলপারের জবানবন্দি

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়াকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু (বাঁয়ে) ও হেলপার লালন মিয়া। ছবি : এনটিভি

কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়াকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসের হেলপার লালন মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আল মামুনের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ধর্ষণে নিজেসহ তিনজনের জড়িত থাকার থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি।

কোর্ট পরিদর্শক তৌফিকুল ইসলাম আসামি লালন মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে প্রধান অভিযুক্ত স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু গত ১১ মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স তানিয়া গত ৬ মে বিকেলে নিজ বাড়িতে আসার জন্য ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে করে রওনা হন। বাসটি কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের বিলপাড় গজারিয়া জামতলী নামক স্থানে পৌঁছার পর বাসের চালক ও সহকারীসহ অন্যরা শাহীনূরকে ধর্ষণ করে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়। ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওই এলাকা থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধারের পর রাত পৌনে ১১টার দিকে তানিয়াকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

পরের দিন বিকেলে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে তানিয়ার বাবা গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সারোয়ার জাহান ৮ মে দুপুরে পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। আসামিরা হচ্ছেন বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু, চালকের সহকারী লালন মিয়া, রফিকুল ইসলাম রফিক, খোকন মিয়া ও বকুল মিয়া। শুনানি শেষে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আল মামুন আট দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডের চার দিনের মাথায় ১১ মে তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আল মামুনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

১২ মে রোববার কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে নিহত তানিয়ার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে বলা হয়, গণধর্ষণের পর মাথায় আঘাত করে নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়াকে হত্যা করা হয়। তাঁর শরীরে ১০টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

রোববার সকালে ঘটনাস্থল বাজিতপুর ও কটিয়াদীর বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তানিয়া ধর্ষণে নিজেসহ তিনজনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন নূরু। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।