ঈদ ঘিরে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে প্রস্তুতি সম্পন্ন

Looks like you've blocked notifications!

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে বাড়ছে ঘরমুখো মানুষের চাপ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষ এই পথে যাতায়াত করে থাকে। ঈদের বাড়তি চাপ মোকাবিলায় এরই মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

যদিও বর্ষার আগে আগে নদীর পানি ও স্রোত ধীরে ধীরে বাড়ছে, আছে নাব্যতা সংকটের ভয়। তবে সব কিছু ছাপিয়ে ঈদে যাত্রী ও যানবাহনের বাড়তি চাপ ভালোভাবেই মোকাবিলা করতে পারবে বলে আশাবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ঈদ ঘিরে বিআইডব্লিউটিএর প্রস্তুতি নিয়ে কাঁঠালবাড়ি ঘাটের টার্মিনাল পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমাদের ৮৭টি লঞ্চ আছে, ঈদের প্রস্তুতি হিসেবে সব ডক ও লঞ্চ সংস্কার করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের আনসার, স্কাউট, মেডিকেল টিমসহ সংশ্লিষ্ট সবকিছুর প্রস্তুতি আছে।’

নদীতে পানি বাড়ায় স্রোতও বাড়ছে; তাই যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে লঞ্চ ও স্পিডবোটগুলোতে পর্যাপ্ত জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম আছে কি না জানতে চাইলে আক্তার হোসেন বলেন, ‘এসব মোকাবিলায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থাকবে, প্রশাসন থাকবে, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী আমরা কোথাও উঠতে দেব না। কোনো যাত্রী হয়রানির শিকার হয়, এমন সবকিছু মোকাবিলা করা হবে। প্রতিটি লঞ্চে জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম আমরা পরীক্ষা করেছি, আরো করব। কোথাও কোনো সরঞ্জাম কম থাকলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এদিকে নদীতে নাব্যতা সংকট মোকাবিলায় বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের গৃহীত পদক্ষেপের কথা জানিয়ে এ বিভাগের উপ-পরিচালক আসগর আলী বলেন, ‘আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমাদের নৌপথের যে নাব্যতা, তা এখনো ভালো আছে। আশা করি এ সংক্রান্ত কোনো সমস্যা সৃষ্টি হবে না। ঘাট ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর যে রকম থাকে—

স্থানীয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি ও ফায়ার সার্ভিস—প্রত্যেকের সঙ্গে আমাদের সমন্বয় আছে। প্রতিবারের মতো এবারো যাতে ঈদ যাতায়াত সুন্দরভাবে নিশ্চিত করা যায়, সে ব্যাপারে আমাদের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া আছে।

বর্ষা মৌসুমে নাব্যতা সংকট মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই নদীতে ড্রেজার বসিয়ে একটি বিকল্প চ্যানেল তৈরির কাজ করছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।

এদিকে ঈদ যাত্রা সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়ে একই রকম আশাবাদের কথা জানান কাঁঠালবাড়ি ঘাটের বিআইডব্লিউটিসি ব্যবস্থাপক মো. জসিমউদ্দিন।

এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে বিআইডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে অনেকগুলো ফেরি মেরামত শেষে সচল করা হয়েছে। আমাদের বহরে এখন ১৬টি সচল ফেরি আছে। আরো দু-একটি যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। নৌপথ যদি ভালো থাকে, কোনো নাব্যতা সংকট না থাকে, ইনশা আল্লাহ ঈদে ঘরমুখো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষদের ভালো সেবা দেওয়ার আশা রাখি।’

ঈদযাত্রা ও বৈরী আবহাওয়াসহ সব বিষয় মাথায় রেখে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান মাদারীপুর সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন।

আবির হোসেন বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবার ঈদুল ফিতরে মাদারীপুর জেলা পুলিশ কাঁঠালবাড়ি ঘাটের আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ঈদের বাড়তি চাপ মোকাবিলায় অধিক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সার্বক্ষণিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধান থাকবে। আমরা লঞ্চঘাট, স্পিডবোট ও ফেরিঘাট আলাদা আলাদাভাবে নিয়ন্ত্রণ করব, যাতে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই বা যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেওয়া বা যাত্রীরা কোনো হয়রানির শিকার না হয়।’