চাঁদ দেখতে উন্নত যন্ত্র কিনবে সরকার
চাঁদ দেখতে উন্নত প্রযুক্তির থিওডোলাইট জাতীয় যন্ত্র কিনবে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রতিটির যন্ত্রের দাম পড়বে ৫০ লাখ টাকার মতো।
এবার ঈদুল ফিতরের আগে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের সচিব আনিছুর রহমান এ তথ্য জানান।
জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি গত ২৯ রমজান প্রথমে ঘোষণা দেয় ওই দিন দেশের কোথাও পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ঈদ হবে ৬ জুন। কিন্তু তারাবির নামাজের পর রাত ১১টার দিকে আবার কমিটি ঘোষণা দেয় চাঁদ দেখা গেছে, ঈদ হবে ৫ জুন। শেষ পর্যন্ত ৫ জুন দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে কমিটির একাধিক সদস্য এবারের ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা নিয়ে কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহর অনুপস্থিতিতে মন্ত্রণালয়ের সচিব আনিছুর রহমান বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন।
সচিব কমিটিকে বলেন, ৪০-৪৫ জন আলেমের পরামর্শক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথমবার দেওয়া ঘোষণার আগে দেশের কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি। তখন আলেম-ওলামারা মত দেন, সৌদি আরবে চাঁদ দেখা যাওয়ার সঙ্গে এ দেশের ঈদের সম্পর্ক নেই। দেশে চাঁদ দেখা যেতে হবে। এ কারণে প্রথম ঘোষণা আসে। পরবর্তী সময়ে ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি চাঁদ দেখতে পেয়েছেন। এ কারণে চাঁদ দেখা যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে কেন আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার করা হবে না- সে প্রশ্নও বৈঠকে আসে। তখন ধর্মসচিব বৈঠকে জানান, চাঁদ দেখার জন্য থিওডোলাইট জাতীয় যন্ত্র কেনা হবে। প্রতিটির দাম পড়বে ৫০ লাখ টাকার মতো।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি রুহুল আমীন মাদানী জানান, তারা মন্ত্রণালয়কে সতর্ক করে দিয়েছেন যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের বিতর্ক তৈরি না হয়। ভবিষ্যতে উন্নত প্রযুক্তির টেলিস্কোপ ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছে সংসদীয় কমিটি। টেলিস্কোপ থাকলেও তা আধুনিক নয়। মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা চাঁদ দেখার জন্য আধুনিক যন্ত্র কিনবে।
রুহুল আমীন মাদানী বলেন, বৈঠকে আসন্ন পবিত্র হজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যাতে সুষ্ঠুভাবে হজের সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়, সে ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে। এবার হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন ঢাকায় হবে। বিমানের ফ্লাইটেও কোনো সমস্যা হবে না বলে তারা আশা করছেন।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হজ ক্যাম্পের সিটসহ অন্যান্য সমস্যা, ফ্লাইটের শিডিউল সঠিক সময়ে না হওয়া এবং সৌদি আরব যাওয়ার পর বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে তা নিরসন করার জন্য সংসদীয় কমিটি ও মন্ত্রণালয়ের একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়।
কমিটির সদস্য শওকত হাচানুর রহমান, মনোরঞ্জন শীল গোপাল, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, এইচ এম ইব্রাহিম, তাহমিনা বেগম ও বেগম রত্না আহমেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।