প্রতি কৃষকের জন্য ৫ হাজার টাকা ভর্তুকি চাইল সিপিডি

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনাসভায় কথা বলেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি : এনটিভি

অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ধানের দাম নিয়ে কৃষকের সাথে সরকার অন্যায় করেছে অভিযোগ করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলছে- আসছে বাজেটে প্রত্যেক কৃষককে পাঁচ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেওয়া উচিত সরকারের।

আজ মঙ্গলবার সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশের অর্থনীতির পর্যালোচনায় সিপিডি আরো জানায়- ব্যাংকিং খাত নিয়ে বর্তমান সরকারের নেওয়া প্রতিটি সিদ্ধান্ত, এ খাতের ক্ষতির কারণ হয়েছে। রাজস্ব আদায়ে দুর্বলতাসহ বেশ কিছু কারণে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে চাপে আছে বলেও জানায় সিপিডি।

এ বছর ধানের দাম নিয়ে বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রান্তিক কৃষকরা। ন্যায্য দাম না পাওয়ায়- ক্ষেতে আগুন দেওয়াসহ দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভও করেছে তারা। এ ক্ষেত্রে সময়মতো চাল আমদানি বন্ধ না করা কিংবা আমদানি শুল্ক না বাড়ানো এবং সঠিক সময়ে ধান ক্রয় না করার কড়া সমালোচনা করে সিপিডি।

এর খেসারত হিসেবে আগামী বাজেটে সরকারকে, কার্ডধারী প্রত্যেক কৃষককে পাঁচ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এক ধরনের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার এমন প্রকট চিত্র কোনো খাতেই বোধহয় এমনভাবে নেই, যতখানি কৃষকের সঙ্গে করা হয়েছে। কৃষক অবশ্যই একটা আর্থিক ভর্তুকির দাবি করতে পারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে। এক কোটি ৮০ লাখ কার্ডধারী কৃষক আছে। তাঁদের কাছে পাঁচ হাজার টাকা করে ফ্ল্যাট রেটে তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হোক।’

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকার আসার পরে যে কয়টি পদক্ষেপ নিয়েছে, এই পদক্ষেপগুলো ব্যাংকিংখাতে আরো বেশি ক্ষতিকারক হয়েছে। সুদের হার নিয়ে নাড়াচাড়া করে ব্যাংকিংখাতের সমাধান হবে না। সুশাসনের ব্যবস্থাকে যদি না আনা যায়, প্রকৃত যারা তসরুপকারী, তাদের যদি শাস্তি দেওয়া না যায়, তাহলে ব্যাংকিং খাতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের আস্থার সংকট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।’

সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বলছে প্রথম ৯ মাসে তাঁদের প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো কম আছে। আমাদের ধারণা হলো, এই অর্থবছরে ৮৫ হাজার কোটি টাকার মতো এই ঘাটতিটা থাকতে পারে।’

সিপিডি বলছে- রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থা এবং টাকার অতিমূল্যায়ণের কারণে বড় ধরনের চাপে আছে দেশের অর্থনীতি। এ অবস্থায় উন্নয়নের ক্ষুধা মেটাতে, রাজস্ব আয় বৃদ্ধিকে আগামী দিনে সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে গবেষণা প্রতিষ্ঠনটি।

ব্যাংকিং খাত ও শেয়ারবাজারে সুশাসন নিশ্চিতের তাগিদ দিয়ে সিপিডি বলছে, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এসব খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কারে সুবিধাভোগীদের প্রভাব কমানো জরুরি।

আসছে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলে, তা বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার পরিপন্থী হবে বলেও জানায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি।