স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা : দুলাভাই গ্রেপ্তার, খবর শুনে বাবার 'আত্মহত্যা'
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্কুলছাত্রী তামান্না আক্তারকে ধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনায় তার দুলাভাই নাঈম ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার ভোরে সদর উপজেলার অষ্টগ্রাম এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে নাঈম ইসলামকে গ্রেপ্তারের খবর শুনে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন তাঁর বাবা বসু মিয়া। শনিবার সকালে নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের গোসাইপুর গ্রামের আত্মীয়ের বাড়ির গাছের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তিনি।
তামান্না ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলীর আমিনপুর গ্রামের নোয়াব মিয়ার মেয়ে। সে শালগাঁও-কালিসিমা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ত।
পরিবারের সদস্যরা জানান, কয়েকদিন আগে তামান্না শালগাঁও গ্রামে তার বড় বোন সিল্কী আক্তারের বাড়িতে বেড়াতে যায়। তামান্নার দুলাভাই নাঈম ইসলাম তাকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যান। বুধবার তামান্না বোনের বাড়ি থেকে ফিরে আসতে চাইলে দুলাভাই অনেকটা জোর করেই তাকে বাড়িতে রাখেন। পরে রাতে তামান্নাকে আমের জুস খাওয়াতে চান নাঈম। কিন্তু তামান্না রাজি হয়নি। পরে নাঈম তাঁর স্ত্রী সিল্কী আক্তারকে আমের জুসটি খাওয়ান। জুস খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই সিল্কী অচেতন হয়ে পড়েন। এর পরই নাঈম তামান্নাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন। অচেতন থেকে জেগে ওঠার পর সিল্কী তাঁর বোন তামান্নাকে ডাকাডাকি করেন। এর মধ্যেই নাঈম কৌশলে পালিয়ে যান। পরদিন তামান্নার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর ও বিজয়নগর সার্কেলের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার রেজাউল কবির জানান, নিহত তামান্নার মায়ের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে গোপন সংবাদের মাধ্যমে মামার বাড়ি থেকে নাঈমকে আটক করা হয়।
রেজাউল কবির জানান, মামলার তদন্তের কার্যক্রম চলছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অভিযোগ দিতে পারব।
এদিকে নবীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজু আহমেদ জানান, বুধবার বসু মিয়ার বাড়ি থেকে ছেলে নাঈমের শ্যালিকার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে তাঁর ছেলে নাঈমের বিরুদ্ধে শ্যালিকাকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ছেলের ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হওয়ার ভয়ে বসু মিয়া বাড়ি ছেড়ে গোসাইপুর গ্রামে তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। ঘটনাটি নিয়ে তিনি চিন্তায় ছিলেন। এই চিন্তা থেকে তিনি ওই আত্মীয়ের বাড়ির পাশের একটি গাছের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।