লাইসেন্সহীন দুগ্ধজাত পণ্যের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
লাইসেন্সবিহীন কতগুলো কোম্পানি ঢাকায় দুগ্ধজাত পণ্য বাজারজাত করেছে, তার তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তালিকা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আজ রোববার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
বিএসটিআইকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। আগামী ১৫ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গত ২১ মে সারা দেশ থেকে দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্য ও পশুখাদ্যের নমুনা বাজার থেকে সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার প্রতিবেদন ২৩ জুন আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আজ পুনরায় সময় আবেদন করায় আদালত ১৫ জুলাই পরবর্তী সময় নির্ধারণ করেন।
বিএসটিআই ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ল্যাবের পরিচালক অধ্যাপক ড. শাহনীলা ফেরদৌসীর আদালতে দেওয়া বক্তব্য লিখিতভাবে এক মাসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দেশে পুষ্টির অন্যতম প্রধান জোগান হিসেবে বিবেচিত গরুর দুধ বা দুগ্ধজাত খাদ্যে এবার মিলেছে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নানা উপাদান।
১০ ফেব্রুয়ারি এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে সরকারের জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের প্রতিবেদনে। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ অন্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গরুর খোলা দুধে অণুজীবের সহনীয় মাত্রা সর্বোচ্চ ৪ থাকার কথা থাকলেও পাওয়া গেছে ৭.৬৬ পর্যন্ত।’ এরপর সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মামুন মাহবুব।
পরে আদালত দুধে সিসা মিশ্রণকারীদের শাস্তির আওতায় আনার ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ ছাড়া রুলে দুগ্ধজাত খাবারে ভেজাল প্রতিরোধে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
পাশাপাশি খাদ্যে ভেজালের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির (মৃত্যুদণ্ড) নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। আদালত ঢাকাসহ সারা দেশের বাজারে কোন কোন কোম্পানির দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যে কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক এবং সিসা মেশানো রয়েছে, তা নিরূপণ করে একটি জরিপ প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দেন। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
যার ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের নির্দেশের পর বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. মাহবুব কবিরকে আহ্বায়ক করে ১৬ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়।