নাটক দুই দেশের মেলবন্ধনকে দৃঢ় করবে : সংস্কৃতিমন্ত্রী
দুই দেশের মেলবন্ধনকে দৃঢ় করতে নাট্যোৎসব আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ আয়োজিত আট দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসবের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশিদের রক্তের সঙ্গে ভারতীয়দের রক্ত একই স্রোতধারায় মিশে গেছে। এ রক্তের ঋণ ভোলা যাবে না। দুই দেশের এই মেলবন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে নাট্যোৎসব আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
সংস্কৃতিমন্ত্রী এ সময় আরো বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের চেতনাকে ধারণ করে বাঙালি সংস্কৃতিকে বিকশিত করার সময় এসেছে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে যেমন সংস্কৃতির বিকাশ হয় তেমনি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ক্ষমতায় থাকলে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরন বলেন, ‘আমরা একই অঞ্চলে বাস করি। আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। আমাদের দুই দেশের তরুণদের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরিতে গুরুত্ব দিতে হবে। কীভাবে আমরা নতুন প্রজন্মের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি করব সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’
ভারতীয় হাইকমিশনার আরো বলেন, ‘এই নাট্যোৎসব আমাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক। এটি শুধু নাটকের উৎসব নয়। এটি ভ্রাতৃত্ব, মনুষ্যত্ব ও বন্ধুত্বের উৎসব। আগামীতে এ ধরনের উৎসব আরো হতে পারে। যে জাতি সংস্কৃতি, শিল্পকলার প্রতি সম্মান দেখায় না, তারা কখনো সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। তাই আমাদের সংস্কৃতির চর্চা করে যেতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান। এ ছাড়া বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি ড. শাহরিয়ার হোসেন। উৎসব কথন পাঠ করেন উৎসবের আহ্বায়ক আরিফ হায়দার।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে নাট্যোৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। তারপর বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীতের সঙ্গে দুই দেশের জাতীয় পতাকা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা, অংশগ্রহণকারী আটটি নাট্যদলের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় নৃত্য পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এরপর সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) উদ্বোধন করেন।
নাট্যোৎসবে মোট ১০টি দল অংশগ্রহণ করছে। দলগুলো হলো সুরন্দম (কলকতা), নাট্যভূমি (ত্রিপুরা), কালিন্দী ব্রাত্যজন (কলকাতা), প্রাঙ্গণে মোর (ঢাকা), দৃশ্যপট (ঢাকা) এবং নাট্যকলা বিভাগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। উৎসব শেষ হবে আগামী ৪ নভেম্বর।