বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি হামলা
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রদলের কনিষ্ঠ নেতাকর্মীদের প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে পিটিয়েছেন সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত বড় ভাই ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। একই সঙ্গে কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলার প্রমাণ সরিয়ে ফেলতে তারা কার্যালয়ের নিচে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাও ভাঙচুর করেন।
এদিকে মার খাওয়ার পরও বড়দের দোতলায় উঠতে বাধা দেন ছোট ভাইরা। একপর্যায়ে তাঁরা দোতলা থেকে কাপ-পিরিচ নিয়ে এসে বড় ভাইদের ওপর ছুড়ে মারেন এবং প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে বড় ভাইদের পেটান।
এ ঘটনার পর ছাত্রদল থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা নিচে কার্যালয়ের সামনে এসে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এ ঘটনায় কেউ আহত না হলেও একটি প্রাইভেটকারের সামনের গ্লাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রদলের কনিষ্ঠ নেতাকর্মীদের প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে পিটিয়েছেন সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত বড় ভাই ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। এরপর ছোট ভাইরাও চেয়ার নিয়ে বড় ভাইদের পেটান। ছবি : স্টার মেইল
ভাঙচুরের পর বৃহস্পতিবারের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি কাল বুধবারের জন্য স্থগিত করেছেন বহিষ্কৃত ও বয়সসীমা তুলে দিয়ে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে সদ্য বহিষ্কৃত ছাত্রদলের সাবেক কমিটির সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। ছোট ভাইদের পিটিয়ে আসার পরপর তিনি বলেন, আমরা ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দাবি বহিষ্কৃত ছাত্রনেতাদের বহিষ্কারাদেশ ও বয়সসীমা তুলে দিয়ে পূর্ণ তফসিল ঘোষণা করা। আমরা আজকের মতো আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আমাদের অবস্থান তুলে নিচ্ছি। আমাদের দাবি না মানলে আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রদলের কনিষ্ঠ নেতাকর্মীদের প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে পিটিয়েছেন সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত বড় ভাই ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। এরপর ছোট ভাইরাও চেয়ার নিয়ে বড় ভাইদের পেটান। ছবি : স্টার মেইল
এর আগে আজ সকালে ছাত্রদলের ঘোষিত কাউন্সিলকে স্বাগত জানিয়ে নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দিতে থাকেন পদপ্রত্যাশী ৩৫ বছর বয়স বা এর নিচে থাকা নেতাকর্মীরা। এদিকে দুপুর ১২টার দিকে বিজয়নগর নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে একটি মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়ের দিকে আসেন ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তাদের দেখে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েন কাউন্সিলকে স্বাগত জানিয়ে অবস্থান করা নেতাকর্মীরা। বড় ভাইরা এই দৃশ্য দেখে কয়েকজনকে ধাওয়া দেন। তাঁরা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে নিচে থাকা প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে বয়সে জুনিয়র নেতাকর্মীদের পেটাতে থাকেন। যারা চেয়ার পাননি তারা ছোটদের কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। বড়রা কার্যালয়ের উপরে উঠতে চাইলে তাদের বাধা দেন ছোটরা। তখন উপরে ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ বেশ কয়েকজন নেতা। ছাত্রদলের ক্ষুব্ধ বড় ভাইদের হাত থেকে তাদের রক্ষার জন্য দোতলায় উঠতে বাধা দেন ছোট ভাইরা। একপর্যায়ে তাঁরা দোতলা থেকে কাপ-পিরিচ নিয়ে এসে বড় ভাইদের ওপর ছুড়ে মারেন এবং প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে বড় ভাইদের পেটান।
এ ঘটনার পর ছাত্রদল থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা নিচে কার্যালয়ের সামনে এসে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এ ঘটনায় কেউ আহত না হলেও একটি প্রাইভেটকারের সামনের গ্লাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এদিকে আন্দোলনকারী ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খন্দকার রিয়াজ বলেন, আমাদের সর্বপ্রথম দাবি কাউন্সিলের মাধ্যমে ধারাবাহিক কমিটি। কিন্তু আমাদের দাবি উপেক্ষা করে একটি কুচক্রী মহল বয়সসীমা বেঁধে দিয়ে কাউন্সিল ঘোষণা করেছে।
খন্দকার রিয়াজ বলেন, কাউন্সিলের প্রার্থী হওয়ার জন্য যে বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে তারাও নিয়মিত ছাত্র না। তারাও একাধিক বিয়ের করেছে। আমাদের দ্বিতীয় দাবি, আমাদের যেসব সহযোদ্ধাকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে এবং বয়সসীমা তুলে দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে ধারাবাহিক কমিটি দিতে হবে।