ভৈরবে শিশু ক্যান্সার প্রতিরোধবিষয়ক কর্মশালা

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মঙ্গলবার শিশু ক্যান্সার সচেতনতা ও প্রতিরোধবিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি : এনটিভি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শিশু ক্যান্সার সচেতনতা ও প্রতিরোধবিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘ক্যান্সার সম্পর্কে জানুন, ক্যান্সারকে জয় করুন’ এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা মঙ্গলবার ওই কর্মশালায় অংশ নেন।

এ ছাড়া কর্মশালায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিসহ শিশুদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। আশিক ফাউন্ডেশন ফর চাইল্ডহুড ক্যান্সারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আশিক পেডিয়াট্রিক মোবাইল প্যালিয়েটিভ কেয়ার ক্লিনিক (পিপিসিসি) ওই কর্মশালার আয়োজন করে।

মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সেমিনার রুমে আশিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ডা. সালমা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু রক্তরোগ ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. মোমেনা বেগম।

ডা. মোমেনা তাঁর বক্তব্যে শিশু ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণসমূহ তুলে ধরে জানান, দীর্ঘমেয়াদি জ্বর ও অন্তত দুই সপ্তাহের বেশি, রক্ত স্বল্পতা, ওজন কমে যাওয়া, দীর্ঘমেয়াদি অবসাদ, সামান্য আঘাতে কালশিটে পড়া বা দাঁতের গোঁড়াসহ অন্যান্য স্থান থেকে রক্তপাত হওয়া। শরীরের বিভিন্ন হাড়ে, গিড়ায় গিড়ায় বা কোমড়ে ব্যথা হওয়া এবং সহজে শরীরের বিভিন্ন হাড় ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা। পেটে বা তলপেটে, মাথায়, গলায়, পায়ে অথবা গোপন অঙ্গে চাকা দেখা যাওয়া, গলার পাশে, বগলে, কুঁচকিতে বিচির মতো ফুলে উঠা।

চোখের মনিতে সাদা দাগ দেখা যাওয়া, চোখ ট্যারা, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, চক্ষুগোলক স্ফীত হওয়া ও অন্ধকারে চোখ জ্বল জ্বল করা। মাথা ব্যথা, বমি বা বমিভাব, চোখে কম দেখতে পাওয়া ও চলাফেরায় ভারসাম্যহীনতা। এ ছাড়া মানসিক বিকাশে হঠাৎ অবনতি হওয়া। দুই সপ্তাহের বেশি মাথা ব্যথা/বমি/বমিভাব এবং দুই বছরের নিচের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মাথা বড় হয়ে যাওয়া।

দীর্ঘ সময় ধরে কাশি সেরে না উঠা এবং শ্বাসকষ্ট হওয়া। গলা ব্যথা ও খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া। মলমূত্র ও কাশিতে রক্ত দেখতে পাওয়া। ত্বকের ক্ষত সেরে না উঠা। মুখ ও মুখ গহ্বরে ক্ষত না শুকানো।

উল্লেখিত এই লক্ষণগুলো যদি থাকে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানান ডা. মোমেনা বেগম। তবে এই সব লক্ষণ থাকার অর্থই ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়া নয় জানিয়ে তিনি জানান, অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে, শিশুদের জন্য শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও চিকিৎসা প্রয়োজন।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহাম্মেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. কে এন এম জাহাঙ্গীর, গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. হরিপদ, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. দিদারুল ইসলাম, ডা. মো. ইকবাল, ডা. শফি উদ্দিন, পৌর কাউন্সিলর মোমেন মিয়া প্রমুখ।

কর্মশালায় বক্তারা শিশুদের বিভিন্ন ক্যান্সারের ধরন, লক্ষণ, প্রতিরোধ, প্রতিকার ও চিকিৎসা বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। ক্যান্সার বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা তৈরি, অহেতুক ভয়-ভীতিতে আক্রান্ত না হওয়া এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তারা বলেন, প্রাথমিক ও দ্রুত শনাক্তকরণই ক্যান্সারের সফল চিকিৎসা শুরুর সর্বোত্ত ধাপ।