পিরোজপুরে দুই ব্যবসায়ী খুন

Looks like you've blocked notifications!
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বরছাকাঠী গ্রাম থেকে আজ বুধবার সকালে জাকির হোসেন নামের এক কাঠ ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছবি : এনটিভি

পিরোজপুর সদর ও নেছারাবাদ উপজেলায় পৃথক ঘটনায় দুই ব্যবসায়ী খুন হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদরের পুলিশ লাইন্স এলাকা ও নেছারাবাদের বরছাকাঠী গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন পুলিশ লাইন্স এলাকার মুদি ব্যবসায়ী মো. হালিম হাওলাদার (৬০) ও বরছাকাঠী গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী জাকির হোসেন (৪৫)।

হালিম হাওলাদার হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ লাইন্স এলাকায় নিজের দোকান থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফেরেননি হালিম। পরে আজ বুধবার সকালে গ্রামের রায়েরকাঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি ডোবায় তাঁর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হালিমের মাথার বিভিন্ন স্থানে জখমের দাগ রয়েছে।

এদিকে, হত্যাকাণ্ডের খবরে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমরা সকালে খবর পেয়ে এখানে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করে ঘটনার তদন্ত করা হবে। থানা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অতি শিগগির ঘটনায় সম্পৃক্তদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে। এ ঘটনায় আমাদের যে পয়েন্টগুলো কাজ করছে, সেটা তদন্তের স্বার্থে বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু আশা করি, শিগগিরই আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত শেষ করে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হব।’

ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে নিহত হালিমের ভাতিজা রনি হাওলাদার বলেন, “মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চাচা দোকানে তাঁর ছেলেরে বলছে যে, ‘আমি বিড়ি কিনা নিয়া আসি। তোরা দোকানটারে গোছা।’ পরে তিনি দোকান থেকে বিড়িও কিনছে, কেনার পরে আর নিজের দোকানে ফেরে নাই। তখন থেকেই নিখোঁজ। আমরা তালাশ করতেছিলাম। পরে আজকে সকালে লাশ পাইলাম। সকালে এইখানকার লোক বলছে যে, ওই রকম একটা লোক মারা গেছে, আইসে দেখি আমার চাচা।”

ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্যে হালিমের মৃতদেহ বর্তমানে জেলা হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অন্যদিকে গতকাল রাতে বরছাকাঠী গ্রামে মিহির নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি স্থানীয় এক যুবককে কুপিয়ে পালাচ্ছিলেন। ওই সময় তাঁকে বাধা দিতে চেষ্টা করেন স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী জাকির। সে সময় মিহির ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান জাকির। শুধু তাই নয়, মিহির পরে ছুরি দিয়ে নিজেই নিজের গলায় আঘাত করেন।

পরে পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় মিহির ও ওই যুবককে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

এ ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম বলেন, ‘নেছারাবাদের ঘটনাটি আপনারা জানেন যে একজন পাগল, তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। তিনি গতকাল হঠাৎ করে মাথা খারাপ হয়ে দুজনকে কুপিয়েছেন। তার মধ্যে একজন মারা গেছে, একজন বরিশাল মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন। পরে পাগল নিজেই আবার নিজেকে কুপিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন। আমরা তাঁকেও বরিশাল মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছি। তাঁর অপারেশন হয়েছে, তিনি এখনো বেঁচে আছেন।’

‘এ ব্যাপারে একটি মামলা করা হয়েছে। যেহেতু পাগল, এখনই আমরা কিছু বলতে পারছি না। এটার সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে, প্রত্যক্ষদর্শীর সামনে ঘটেছে। এই ঘটনাটিও সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে পাগল যদি দোষী হয়ে থাকে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’ বলেন পুলিশ সুপার।

জাকিরের মৃতদেহ বর্তমানে পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।