ঢাবিতে অনশন করে ছাত্রলীগের নয়জন অসুস্থ

Looks like you've blocked notifications!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আমরণ অনশন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের নয়জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ছবি : এনটিভি

সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়াসহ চার দফা দাবিতে গত শুক্রবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আমরণ অনশনে বসেছেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা। অনশন শুরুর পর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এরই মধ্যে অনশনরত ছাত্রলীগের নয়জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

এঁরা হলেন ছাত্রলীগের সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক রানা হামিদ, সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপসম্পাদক ইমদাদ হোসেন সোহাগ, সাবেক উপকর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক মুরাদ হায়দার টিপু, সাবেক উপপ্রচার সম্পাদক খন্দকার রবিউল ইসলাম রবি, সাবেক উপপরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সজিব, সাবেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আনন্দ সাহা পার্থ, সাবেক উপত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক কৃষ্ণ মজুমদার, সাবেক সহসম্পাদক এস এম মামুন এবং সাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপপ্রচার সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ।

এদের মধ্যে দুজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়েছে। আর বাকিদের রাজু ভাস্কর্যে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় দেখা গেছে।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়াসহ চার দফা দাবিতে গত ২৬ মে থেকে রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন বিক্ষুব্ধরা। এসব দাবি আদায়ে গত শুক্রবার দুপুর থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন তারা।

এরই মধ্যে আন্দোলনকারীদের অনশন থেকে সরে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। তবে তার আহ্বানে সাড়া দেননি আন্দোলনকারীরা।

অনশনের বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অনশন থেকে উঠে এসে বিক্ষুব্ধরা যদি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়, আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যেকোনো সময় তাদের সাথে আলোচনা করতে প্রস্তুত। আলোচনার দরজা তাদের জন্য খোলা আছে। তবে আলোচনায় কোনো শর্ত থাকবে না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আমরণ অনশন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের নয়জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ছবি : এনটিভি

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনরত রাকিব হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা আমাদের চার দফা দাবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে জানিয়েছি এবং নানক ভাইয়ের কাছে আমরা বিতর্কিতদের লিস্টসহ দিয়েছি। সংগঠনকে বিতর্কমুক্ত করার সদিচ্ছা যদি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের থেকে থাকে তাহলে তারা তাদের কাছ থেকেই সেই তালিকা প্রমাণসহ নিতেন।’

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের প্রস্তাবে শর্তহীনভাবে অনশন থেকে ওঠে আলোচনায় যাবেন না জানিয়ে রাকিব হোসেন বলেন, এর আগেও আমরা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে আলোচনা করতে এবং বিতর্কিতদের তালিকা প্রমাণসহ দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে আমরা হামলার শিকার হয়েছিলাম। এজন্যই এখন এই পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের কর্মসূচি থেকে কোনো আশ্বাসে উঠব না। আমাদের প্রাণের বিনিময়ে হলেও আমরা ছাত্রলীগকে কলঙ্কমুক্ত করব।

যে গত মাসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

ছাত্রলীগের অনশনকারীদের দাবিগুলো হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ; শূন্য ঘোষিত ১৯টি পদ ছাড়াও যারা বিতর্কিত রয়েছেন তাদের নাম পদবিসহ প্রকাশ, বিক্ষুব্ধদের মধ্য থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে বিতর্কিতদের জায়গায় পদায়ন এবং বিক্ষুব্ধদের ওপর হামলার বিচার।