সাফল্যের ১৭ বছরে এনটিভি

Looks like you've blocked notifications!

শুভ জন্মদিন। শুভ জন্মক্ষণ। মানবজীবনের মতোই প্রতিষ্ঠানের জন্মলগ্নও গুরুত্ববহ। মানুষ যেমন হামাগুড়ি দিতে শিখে ক্রমে হাঁটি হাঁটি পা পা করে একদিন অবয়বে-মননে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, তেমনি প্রতিষ্ঠানও ক্রমবিকাশের পথে চলে। আর এই বিকাশের সঙ্গী হতে ২০০৩ সালের ৩ জুলাই গণমাধ্যম দুনিয়ায় পদার্পণ এনটিভির। দেখতে দেখতে এখন ১৬ বছরের তরতাজা তরুণপ্রাণ প্রতিষ্ঠানটি।

‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’ স্লোগান নিয়ে এনটিভির জন্ম। আর এই আগামীর পথে চলতে চলতে সাফল্যের সঙ্গে ১৬ বছর পার করল বেসরকারি এই স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল। প্রতিষ্ঠানটি এখন আরো ঋদ্ধ, আরো প্রাণচঞ্চল ও আরো গণমুখী। আজ ১৭ বছরে পা রাখল এনটিভি।

এই পথচলায় এনটিভি কুড়িয়েছে অগণিত দর্শকের ভালোবাসা। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। দর্শকের অবিরাম তথ্য ও বিনোদনের চাহিদা পূরণ, দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা ও রুচিশীল বিনোদনের মাধ্যমে সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়াই ছিল এনটিভির অন্যতম প্রয়াস। ছিল ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সুস্থ মানস।

আজ ৩ জুলাই, বুধবার এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। শুভকামনা জানিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের খ্যাতনামা কবি, শিল্পী-সাহিত্যিক, রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, ক্রীড়াব্যক্তিত্বসহ অনেকেই। দেশ-বিদেশের অগণিত দর্শকের অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী।

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরছে এনটিভি : রাষ্ট্রপতি

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে বলেছেন, ‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’—এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে এনটিভি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বৈচিত্র্যপূর্ণ ও রুচিশীল অনুষ্ঠানমালা এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে। এর মাধ্যমে তারা তুলে ধরছে বাঙালি সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে। এনটিভির পরিচালনা পর্ষদ, কলাকুশলী, সংবাদকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে উল্লেখ করেন, ‘গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় গণতন্ত্রের বিকাশ, জনমত গঠন এবং সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধ রচনায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমান সরকার অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। গণমাধ্যম যাতে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে লক্ষ্যে সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা একান্ত অপরিহার্য। পাশাপাশি গণমাধ্যমগুলোকে দেশের সমাজব্যবস্থা ও সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও বস্তুনিষ্ঠ অনুষ্ঠান প্রচারে এগিয়ে আসতে হবে। গণমাধ্যমসমূহ দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় অধিকতর দায়িত্বশীলতার সাথে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করবে—এটাই সকলের প্রত্যাশা।’

রাষ্ট্রপতি আরো উল্লেখ করেন, এনটিভি অনুষ্ঠান পরিবেশনায় পেশাদারিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে আইএসও সার্টিফিকেট প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে কৃতিত্বের দাবিদার। আমি আশা করি, সাফল্যের এ ধারা অব্যাহত রেখে সৃজনশীল পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এনটিভি বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী দর্শকদের মধ্যে একটি বিশেষ স্থান করে নেবে।’ তিনি এনটিভির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।

এনটিভির উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি : প্রধানমন্ত্রী

দেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির ১৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুভেচ্ছাবাণী দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি ১৬তম বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি এনটিভির পরিচালনা পর্ষদ, সাংবাদিক, কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই দেশে গণমাধ্যমের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরাই দেশে প্রথম বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চালুর অনুমোদন দিই। আমাদের সরকার রূপকল্প-২০২১ এবং রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্য অর্জনে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ জন্য আমরা ২০০৯ সাল থেকে গণমাধ্যম, তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছি। জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ প্রণয়ন করা হয়েছে। বেসরকারি খাতে ৪৪টি টেলিভিশন, ২২টি এফএম রেডিও এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে টেলিভিশনকে শুধু বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ভূমিকা রাখলে চলবে না। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও অনুষ্ঠান পরিবেশনের মাধ্যমে দেশের মানুষের উন্নত মনন গঠনে এবং জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসসহ নানা অপতৎপরতা দমনে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে অবদান রাখতে হবে। আমরা বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত করব—ইনশাআল্লাহ।’

প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এনটিভি সঠিক তথ্য-উপাত্ত পরিবেশন ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বজায় রেখে নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচার ও রুচিশীল অনুষ্ঠান পরিবেশনের মাধ্যমে আমাদের দেশজ শিল্প, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।’ তিনি এনটিভির উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।

রাষ্ট্রের চিত্র পরিস্ফুটনে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছে এনটিভি : তথ্যমন্ত্রী

১৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে এনটিভি পরিবারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘১৬ বছর পূর্ণ করে এনটিভি ১৭তম বর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। গত ১৬ বছরের পথচলায় এনটিভি বাংলাদেশে বাঙালির সংস্কৃতিকে লালন করার ক্ষেত্রে, আমাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার ক্ষেত্রে এবং সংবাদ পরিবেশন করার ক্ষেত্রে, সমাজের-রাষ্ট্রের চিত্র পরিস্ফুটনের ক্ষেত্রে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছে।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি আশা করব, এনটিভি ভবিষ্যতের পথচলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে আজকে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে, বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে এনটিভি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, অনবদ্য ভূমিকা পালন করবে।’

আশা করি, আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে : চেয়ারম্যান

এনটিভির জন্মদিনে সম্মানিত দর্শক, কেবল অপারেটর, বিজ্ঞাপনদাতা ও সর্বস্তরের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী। পাশাপাশি তিনি এই দীর্ঘ চলায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন, শিল্পী-কলাকুশলী সবাইকে ধন্যবাদ জানান। শুভেচ্ছা জানিয়ে উৎসাহিত করার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

এনটিভির চেয়ারম্যান দর্শক ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের প্রিয় চ্যানেল এনটিভিতে আমরা চেষ্টা করে থা‌কি আপনাদের মতামতের ভিত্তিতে সংবাদ ও প্রোগ্রাম সাজানোর জন্য। বিশেষ করে আমরা চেষ্টা করে থাকি, নিরপেক্ষ থেকে সংবাদ পরিবেশন করা যায়, সেদিকে লক্ষ রেখে আমাদের সংবাদকর্মীদেরও আমরা নতুনভাবে বিন্যাস করেছি। নতুন নতুন টেকনোলজির আবির্ভাব ঘটেছে এনটিভিতে এবং আমরা প্রোগ্রাম বিভাগকেও নতুনভাবে সাজিয়েছি। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন, এনটিভির প্রোগ্রাম নতুন ও সুন্দরভাবে করার জন্য আমাদের নিজস্ব জমিতে একটি বড় স্টুডিও করা হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের কথা মাথায় রেখে, যাঁরা দেশের বাইরে আছেন তাঁদের কথাও চিন্তা করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এনটিভির প্রচার করে থাকি। বিশেষ করে, প্রতি মাসেই সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ‘এনটিভি নাইট’ হিসেবে একটি প্রোগ্রাম হয়ে থাকে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়াতে প্রতিবছর ‘এনটিভি ফেস্টিভ্যাল’ হয়ে থাকে; মালয়েশিয়া, দুবাই, সিঙ্গাপুর, লন্ডন, আমেরিকা, কানাডায়ও আমাদের এনটিভি নিজে এবং যৌথভাবে প্রোগ্রাম করে থাকে। এর কারণ, আমাদের দেশের জনগণ, দেশের বাইরে যাঁরা বাংলা ভাষাভাষী আছেন, তাঁরা সবাই যেন তাঁদের পরিবার নিয়ে বাংলা ভাষাভাষীর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, আপনারা আরো দেখবেন, ঈদের নাটক আমরা যেভাবে সাজিয়েছি এবং এনটিভিতে সামনে বেশ কিছু নতুন নতুন রিয়েলিটি শো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিছুদিন আগেই শুরু হয়েছে গৃহিণীদের নিয়ে গানের রিয়েলিটি শো ‘সিলন সুপার সিঙ্গার’। এ ছাড়া আমাদের এনটিভি অনলাইন কাজ করছে। আপনারা জেনে খুশি হবেন, আপনাদের এই প্রিয় অনলাইনেও প্রায় সোয়া কোটির মতো ভিউয়ার আছে এবং বাংলাদেশে আমরাই একমাত্র টেলিভিশন, ইউটিউব থেকে ১০টি পুরস্কার পেয়েছি। আমরা মনে করি, এটা আপনাদের ভালোবাসারই অর্জন।

আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী বলেন, ‘আমরা আশা করব, যেভাবে আপনারা এত দিন সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন, আগামীতে দিনগুলোতে তা অব্যাহত রাখবেন। বিশেষ করে, আপনাদের আরো মতামত ও পরামর্শ পেলে আমরা উপকৃত হব। আপনাদের মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতেই এনটিভির প্রোগ্রামগুলো সাজাতে ও প্রচার করতে চাই। আমি আবারও এনিটিভি পরিবারের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে আমাদের পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এক এক করে ১৭ বছরে পা দিয়েছে এনটিভি। সবার পরিশ্রমের ফলেই আজকের এই এনটিভি।‘

শুরু থেকেই আধুনিক সম্প্রচার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করে এনটিভি। আর এই কবছরে শব্দ, ছবি আর সম্প্রচারে অন্য চ্যানেলের সঙ্গে একটা বড় পার্থক্য গড়ে নিয়েছে চ্যানেলটি। প্রযুক্তির বিস্ময়ের সঙ্গে দর্শককে পরিচয় করিয়ে দিতে খুব একটা সময় নেয়নি এনটিভি। দেশে-বিদেশে ব্যাপ্তি আর সম্প্রচার সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চ্যানেলের অনুষ্ঠানে এসেছে বৈচিত্র্য। গড়ে উঠেছে এনটিভির নিজস্ব চরিত্র, যার নেপথ্যে রয়েছে সুচিন্তিত-সুপরিকল্পিত পরিচালনা ও দক্ষ কর্মীদের নিরলস পরিশ্রম।

ডিজিটাল মাধ্যমেও অগ্রযাত্রার অংশীদার এনটিভি। ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে এনটিভির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এনটিভি অনলাইন। শুরু থেকে এনটিভি অনলাইন দ্রুত বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য দেশ-বিদেশের সংবাদ, ফিচার, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন, ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করছে। এ কারণে দ্রুত বিশ্বব্যাপী বাঙালি পাঠকের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে উঠেছে এনটিভি অনলাইন। অল্প সময়েই এনটিভির ফেসবুক ফ্যানপেজ অর্জন করে এক কোটিরও বেশি মানুষের লাইক। এ ছাড়া এনটিভি অনলাইনের রয়েছে ২২টি ইউটিউব চ্যানেল, যার সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ৬০ লাখেরও বেশি।

দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা

এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাঁচটি অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্ব প্রচার করা হবে। ভোর থেকে শুরু হয়ে রাত পর্যন্ত চলবে এসব অনুষ্ঠান।

বিশেষ পর্ব শুরু হবে ভোর ৬টা ৫৫ মিনিটে ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’-এর বিশেষ পর্ব প্রচারের মধ্যে দিয়ে। শেষ হবে রাত ১১টায় ‘এই সময় : সতেরো বছরে এনটিভি’ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া বিকেল ৪টায় দেশের গুণীজনদের নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হবে এনটিভির স্টুডিওতে, যা সরাসরি প্রচার করা হবে।

এর আগে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ‘আজ সকালের গান’-এর অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্ব সরাসরি প্রচার করা হবে। সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে পি এ কাজল পরিচালিত বাংলা ছায়াছবি ‘এক টাকার বউ’ সম্প্রচার করা হবে। ছবির মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শাকিব খান, শাবনূর, রোমানা, সুব্রত, রাজ্জাক, দিঘী প্রমুখ। জাহাঙ্গীর চৌধুরীর প্রযোজনায় দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমাদের টেলিভিশন’ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ‘আপনার জিজ্ঞাসা’র বিশেষ পর্ব প্রচার করা হবে।

এনটিভি সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য

গত ১৬ বছরে এনটিভি নানাভাবে এগিয়েছে। এ সময়ে টেলিভিশন চ্যানেলটির সবচেয়ে বিশেষত্বের জায়গা হলো এর খবর। ঝকঝকে স্পষ্ট ছবি তোলার কাজটি সারছেন এনটিভির চিত্রগ্রাহকরা। আর তা যথাযথ সম্পাদনার মাধ্যমে, প্রচারযোগ্যের কাজটি করেন ভিডিও এডিটররা।

আদর্শ টিভি চ্যানেলের মানদণ্ড ধরে রেখে তা চূড়ান্তভাবে প্রচারের দায়িত্ব পালন করেন প্রযোজকরা। অ্যানিমেশন, গ্রাফিকস কার্ড তৈরি করে সংবাদ বা অনুষ্ঠান সমৃদ্ধ করার কাজটি চলে এনটিভির গ্রাফিকস বিভাগে।

উপস্থাপনার আঙ্গিকে এবং অবশ্যই প্রযুক্তিতে অন্যসব চ্যানেলকে মুহূর্তেই পেছনে ফেলে দেওয়া এই প্রতিষ্ঠান এখনো অব্যাহত রেখেছে তার এগিয়ে চলা।

নেপথ্যের এই কর্মমুহূর্ত প্রমাণ করে এনটিভির নিবিড় নিষ্ঠার কথা। এই পথচলায় রয়েছে অসংখ্য মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টা আর দিন-রাতের পরিশ্রম। বিভিন্ন সময়ে নানা সমস্যা সমাধানে জরুরি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় এনটিভির মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগ। যাবতীয় কাজের নেপথ্যে নীরব সহায়কের ভূমিকা পালন করে আসছেন তাঁরা।

এনটিভি সঞ্চালনায় অনেকটা দায়িত্ব বর্তায় বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের ওপর। টাকা-পয়সার সব খুঁটিনাটি হিসাবের গুরুদায়িত্ব পালন করে এনটিভির অর্থ ও হিসাব বিভাগ।

প্রথম থেকেই এনটিভির পর্দার প্রশংসা করে এসেছেন আপামর দর্শক। আর সেই কাজটার ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রেখে চলেছেন একাধারে এনটিভির ব্রডকাস্ট, আইটি, এমসিআরসহ অন্যরা।

‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’ চলার শপথ নিয়ে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হালনাগাদ প্রযুক্তির সঙ্গে হেঁটেছে এনটিভি। এটি দেশের প্রথম ও একমাত্র চ্যানেল, যেখানে ম্যাকভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে ফর্ক অটোমেশন দিয়ে স্টেশন পরিচালিত হয়। সিএনএন বা সিবিএস নিউজ এমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে।

দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব ইভেন্টের ফুটেজ সংরক্ষণে সবচেয়ে সমৃদ্ধ আর্কাইভের দাবিদার এনটিভি। টেপ ছাড়াও যেখানে সংযুক্ত হয়েছে সার্ভারভিত্তিক ডিজিটাল ফুটেজ সংরক্ষণ ব্যবস্থা। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এনটিভিতে যোগ হয়েছে মেমোরি কার্ডভিত্তিক অত্যাধুনিক ক্যামেরা।

বলা হয়ে থাকে, টেলিভিশন ওয়ানটাইম ইউস মিডিয়া, অর্থাৎ পর্দায় একবার যা দেখানো হয়ে যায়, তা আর টেনে দেখার সুযোগ নেই। তবে এনটিভির এ সীমাবদ্ধতা দূর করেছে এনটিভি অনলাইন। দেশের প্রথম ভিডিও কনটেন্ট সমৃদ্ধ অনলাইন পোর্টাল। একঝাঁক নিবেদিত কর্মীবাহিনীর নিরন্তর পরিশ্রমের ফলে এরই মধ্যে দেশ-বিদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পোর্টালে পরিণত হয়েছে ntvbd.com। এর ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো স্থানে সরাসরি দেখা যাচ্ছে এনটিভি।

দর্শক, শুভানুধ্যায়ীদের ভালোবাসায় সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এনটিভি এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে—বর্ষপূর্তির শুভক্ষণে এমনই প্রত্যাশা।