‘যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের কেউ আ.লীগের সদস্য হবে না’

Looks like you've blocked notifications!

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের পরিবারের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া, এদের সদস্য করার ব্যাপারে দলের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। এখানে আপোসকামিতার প্রশ্নই ওঠে না।’

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) নবনির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিএসআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদসহ কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় তিনি সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

গত সপ্তাহে আপনি বলেছেন, পরিবারে কেউ যুদ্ধাপরাধী বা জামায়াতে ইসলামীর সদস্য থাকলেও আওয়ামী লীগের সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে এটা বাধা হবে না। আপনার এ বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দলের ভেতরেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে আপনার মন্তব্য কী? এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নো নো, এই কথা আমি বলতে পারি না। আমি এ কথা বলিইনি। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ স্বাধীনতার আদর্শ, বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্মের চেতনার পক্ষের দল। কেউ যদি আমাকে জড়িয়ে এ ধরনের কোনো কথা প্রচার করে থাকে, তাহলে আমি বলব তিনি আমার কথার বিকৃতি করেছেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী পরিবার হলে সেখানে আমরা সদস্য সংগ্রহ করি না। তারা সদস্যপদ নিতে পারেন না। এটা আমাদের পুরোনো স্ট্যান্ড এবং এই স্ট্যান্ডে আমরা অটল। এর সঙ্গে কোনো আপস নেই।’

তিনি বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি বরাবরই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে। তাদের পরিবারের কেউ যদি আসতে চায় আমাদের তো প্রশ্ন থাকবেই। এখানে আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রশ্ন জড়িত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্ন থাকায় এখানে আমরা আপস করতে পারি না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নতুন যে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে, এর মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী কেউ আওয়ামী লীগে আসতে পারবে না।’

বিএনপির কেউ যদি আওয়ামী লীগে আসতে চায়, তবে অবস্থান কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা বিএনপি থেকে আসতে চায় সেই ব্যাপারেও আমরা নীতিগতভাবে চিন্তাভাবনা করেই ঠিক করি। অন্য কোনো দল থেকে এলে আমরা সাম্প্রদায়িকতার বিষয়টা বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা যাদের দেখি, তারা জামায়াত হোক বিএনপি হোক একইভাবে দেখি।’

ঈশ্বরদীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলার ঘটনায় ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির নয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন পাবনার একটি আদালত। বিএনপি মহাসচিব এ রায়ের সমালোচনা করেন। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘রায়টি দিয়েছেন আদালত। রায় প্রত্যাহার করবেন কি না আদালতই জানেন। এই রায়ে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। যখন বিএনপির লোকজন সাজাপ্রাপ্ত হয় তারা সব বিচারকে প্রহসনের বিচার বলে, বিচারের রায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তারা আদালতের রায় মানে না, এটা নতুন কোনো বিষয় নয়।’

তিনি বলেন, ‘রায় নিয়ে মির্জা ফখরুল যা বলেছেন, তা তাদের চিরাচরিত অভ্যাস, তারা সব সময় যে রকম বলে থাকে সেই রকমই বলছে।’

বরগুনার হত্যকাণ্ডের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যদি দলীয় কারো সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়, অবশ্যই তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে। এখানে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর, এটা আমি বলতে পারি।’

নয়ন বন্ড ক্রসফায়ারে মারা গেছে—এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নয়ন বন্ডের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে বক্তব্য রেখেছেন আমি তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে একমত।’