ময়মনসিংহে ‘হেলেপড়া’ ভবন নিয়ে তদন্তে দুই কমিটি

Looks like you've blocked notifications!
ময়মনসিংহে একটি ছয় তলা ভবন পাশের চারতলা ভবনের ওপর হেলে পড়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ছবি : এনটিভি

ময়মনসিংহ নগরীর সানকিপাড়া শেষ মোড় এলাকার একটি চারতলা ভবন পাশের ভবনে  ছয়তলা ভবন ‘হেলে পড়া’র ঘটনা তদন্তে আলাদা দুটি কমিটি গঠিত হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সমর কান্তি বসাককে আহ্বায়ক করে গঠিত নয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে তিন কর্মদিবসে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটুর নির্দেশে গঠিত হয়েছে আরেকটি কমিটি। সাত সদস্য বিশিষ্ট  এই কমিটির আহ্বায়ক নির্বাহী প্রকৌশলী মো রফিকুল ইসলাম মিয়া জানান, জরুরি ভিত্তিতে করপোরেশনের কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। দুটি কমিটিই গঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার সকালে। ময়মনসিংহের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক (ডিসি) গালিভ খান ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী এই খবর নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল এগারটায় তদন্ত কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার মাহমুদ হাসান হেলে  পড়া ভবনটি দেখতে যান। এদিকে দুপুরে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল টিটু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে  ময়মনসিংহ পৌরসভা ও গনপূর্ত বিভাগের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের বর্তমান কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান দুলাল ছয়তলা ওই বাড়িটির মালিক। ভবনের নকশায় বড় ধরনের ত্রুটি রয়েছে। তিনি বিল্ডিং কোড মেনে বাড়ি করেন নি। সরেজমিন গিয়ে দেখা বাড়ির চারপাশে সাড়ে তিনফুট জায়গা খালি রাখার বিধান থাকলেও তিনি সেই নিয়ম লংঘন করেছেন। তাঁর বাড়িটি পাসকৃত নকশার আদলে তৈরী করা হয়নি।’

ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মোমেন মোর্শেদ বলেছেন, ‘স্বাভাবিকভাবে পাশাপাশি ভবনে যে পরিমাণ নিরাপদ দূরত্ব থাকার কথা আমরা তা দেখতে পাইনি।’

এ বিষয়ে বাড়ির মালিক ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের বর্তমান কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান দুলাল জানান, তিনি এর আগে পৌরসভার কাউন্সিলার ছিলেন তিন বার। বিল্ডিং কোড মেনেই ২০১৫ সালে হাউজ বিল্ডিং থেকে সাড়ে সাঁইত্রিশ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তিনি ছয়তলা বাড়িটি করেছেন। তার পাশের বাড়িটি তাঁর চাচাতো ভাইদের। তিনি যখন বাড়ি করেন তাঁর ভাইদের বাড়িটি ছিল দুই তলা। পরে তার ভাইয়েরা বাড়িটি চার তলায় উন্নীত করেন। এবারে চতুর্থ দফায় কাউন্সিলার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাঁকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। তিনি দাবি করেন, ভবন হেলে পরার গুজব এরই অংশ।

তিনি আরো বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাউজ বিল্ডিং থেকে তাঁর বাড়ির নকশা ও অনুমোদনপত্র পৌঁছানো হয়েছে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সমর কান্তি বসাকের কাছে।’

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর সানকিপাড়া শেষ মোড় এলাকায় একটি ছয় তলা ভবন পাশের চার তলা ভবনের ওপর হেলে পড়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। খবর দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গণপুর্ত বিভাগের বিভাগের প্রকৌশলীরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রশাসনের নির্দেশে দুটি বাড়ি থেকেই ভাড়াটিয়ারা সরে গেছেন। উল্লেখ্য কয়েক বছর আগে ভুমিকম্পে শহরের বেশ কয়েকটি ভবন হেলে পড়ার গুজব রটে। তদন্তে সব মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়।