রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তা করবে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি

Looks like you've blocked notifications!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিপিসির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির প্রধান সং তাওয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছবি : ফোকাস বাংলা

চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) শুক্রবার জানিয়েছে, আপসে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য তারা মিয়ানমারের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।

আজ শুক্রবার বেইজিংয়ে দিয়াওয়ুতাই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসে সিপিসির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির প্রধান সং তাও এ আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট আপসে সমাধান এবং রোহিঙ্গাদের প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসন যাতে যত দ্রুত সম্ভব করা যায় সে জন্য আমরা অং সান সু চিসহ মিয়ানমারের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি আরো জানান, সং তাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

‘এখন দুই দেশের মধ্যে খুব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে এবং আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখব,’ বলেন তিনি।

সিপিসি নেতা বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে ‘বিশ্বের মাঝে বিরল’ বলে আখ্যায়িত করেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ গত অর্থবছরে ৮.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং বর্তমান অর্থবছরে ৮.২ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

সং তাওয়ের প্রত্যাশা, সিপিসি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর হবে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদল চীন সফর করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

‘এসব সফরের মাধ্যমে দুই দলের মধ্যে সম্পর্ক অধিকতর ঘনিষ্ঠ হবে,’ বলেন তিনি।

সিপিসি নেতা জানান, তাদের প্রতিনিধিদল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে।

বৈঠকের শুরুতে তিনি চীন সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

চীনকে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ও সিপিসির মধ্যে এক গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান।

তিনি জানান, বাংলাদেশ ও চীন একই লক্ষ্য লালন করে এবং তা হলো দারিদ্র্য দূরীকরণ ও জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ। ‘এ লক্ষ্য পূরণে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে,’ বলেন তিনি।

বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে তার বাবার চীন সফরের কথা স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তার সফর নিয়ে আলোচনাকালে এক ‘নতুন চীন’ সৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস করেছিলেন। ‘আমি এখন সেই চীন দেখতে পাচ্ছি যা সফরের পর বঙ্গবন্ধু পূর্বাভাস করেছিলেন।’

এ বিষয়ে শেখ হাসিনা জানান, তিনি বঙ্গবন্ধুর ডায়েরি থেকে ‘নয়া চীন’ নামে একটি বই সম্পাদনা করছেন। এটি শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে জানান তিনি।

সিপিসি নেতা বইটি চীনা ভাষায় অনুবাদের আগ্রহ দেখান এবং বলেন, প্রকাশের পর বইটি তারা চীনা জনগণের মাঝে বিতরণ করবেন।

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের জনগণ ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক খান, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল করিম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।