সালিশি বৈঠকে যৌন নির্যাতনের বর্ণনা, ভিডিও ভাইরাল

Looks like you've blocked notifications!

কুষ্টিয়ার খোকসায় সালিশি বৈঠকের নামে মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে তাঁর ওপর হওয়া যৌন নির্যাতনের বর্ণনা প্রকাশ্যে বলতে বাধ্য করার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ঘটনার প্রায় সপ্তাহ পর পুলিশ নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী ও তাঁর মাকে খুঁজে বের করে মামলা রেকর্ড করেছে। তবে সালিশকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।

গত ১ জুলাইয়ের ঘটনার ওই ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্ত যৌন নির্যাতনকারীর পাশে প্রতিবন্ধী কিশোরী ও তার মধ্যবয়সী স্বামী পরিত্যক্তা মাকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।

পরে নির্যাতিত কিশোরীর কাছে আপত্তিকর প্রশ্নের উত্তর আদায়ের চেষ্টা করে মজলিশে বসা মাতব্বররা।

স্থানীয়রা জানান, গত ২৭ জুন উপজেলা সদরের থানাপাড়ার আমির আলীর ছেলে অন্তর প্রতিবেশী প্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১৩) জোরপূর্বক পাটক্ষেতে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন করে। পরে স্থানীয়রা কিশোরীকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ঘটনার চার দিন পর গত ১ জুলাই গ্রাম্য মাতব্বররা গ্রামে সালিশি বৈঠকে বসে।

গ্রামের রাস্তার মোড়ে সালিশি বৈঠকে বিভিন্ন বয়সী কয়েকশ লোকের উপস্থিতিতে নির্যাতিত কিশোরীর কাছে আপত্তিকর প্রশ্নের উত্তর আদায়ের চেষ্টা করে মাতব্বররা।

সালিশে অভিযুক্ত অন্তরকে চড়-থাপ্পর দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিশোরীর পরিবার এমন বিচারে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মাতব্বররা। ভয়ে পরের দিন ঘরবাড়ি ফেলে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয় নির্যাতিত কিশোরীর পরিবার।

মাঝে প্রকাশ্যে সালিশি বৈঠকের ভিডিওটি ভাইরাল হলে পুলিশ নির্যাতিত কিশোরীর পরিবারকে ফিরিয়ে এনে বুধবার নারী নির্যাতনের মামলা নিয়েছে।

মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, মামলাটি সবে হাতে পেয়েছেন, বিষদ পর্যালোচনা করতে পারেননি। তবে অভিযুক্ত অন্তরকে ধরা হয়েছে। তবে সে কিশোর হওয়ায় সেফ কাস্টডিতে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় যুবলীগ নেতা আল-আমীন বকুলের সভাপতিত্বে সালিশি বৈঠকে খোকসা পৌরসভার কাউন্সিলর ইমরান হোসেনও উপস্থিত ছিলেন। যোগাযোগ করা হলে ইমরান দাবি করেন, এলাকার কাউন্সিলর হিসেবে তিনি গিয়েছিলেন। তবে তিনি সালিশ করেননি। সালিশ করেছে মেয়ের ভাই ও অন্যরা।

সালিশটি জনসম্মুখে হওয়ার কথা স্বীকার করে বকুল বলেন, সালিশে তিনি মেয়ের এক ফুপাতো ভাইকে মারের (হামলার) হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়েছিলেন।

এদিকে নিজের ছেলেকে নির্দোষ দাবি করে অভিযুক্ত ধর্ষকের মা বলেন, তার ছেলে মেয়েটির সাথে কথা বলার সময়ই মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ‘কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি।’