নুসরাত হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিলেন কেরোসিন ও বোরকা বিক্রেতা

Looks like you've blocked notifications!

ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় সবশেষ কেরোসিন বিক্রেতা, বোরকার দোকানের মালিক ও কর্মচারী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে এই মামলায় মোট আটজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গতকাল রোববার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রসিদের আদালতে এই তিনজন সাক্ষ্য দেন। পরে তাঁদের আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন। সপ্তম দিনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আদালত আজ সোমবার পর্যন্ত মুলতবি হয়।

আজ মামলার অষ্টম দিনে নুসরাতের ছোট ভাই রায়হান ও স্থানীয় দোকানদার জহিরের সাক্ষ্য গ্রহণ করার কথা রয়েছে।

গতকাল সকালে মামলা শুরুর আগে এই মামলার ১৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘রোববার আদালতে মামলার সাক্ষী কেরোসিন বিক্রেতা লোকমান হোসেন লিটন জানিয়েছেন, তিনি মামলার আসামি শামীমের কাছে কেরোসিন বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া ঘাতকরা নিজেদের পরিচয় গোপন করার জন্য ঘটনার সময় বোরকা পরিধান করে। সেই বোরকা কেনা হয় জসিম উদ্দিনের দোকান থেকে। জসিম ও তাঁর দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদ সাক্ষ্য দিয়েছেন।’

এর আগে আরো পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৭ জুন সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান, নুসরাতের বান্ধবী নিশাত ও সহপাঠী নাসরিন সুলতানা ফুর্তি।

এরপর ৪ জুলাই সাক্ষ্য দেন মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী মো. মোস্তফা। বিচারকের কাছে মোস্তফা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সেই দিনের কিছু সময়ের বর্ণনা দেন। তুলে ধরেন অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার অপকর্ম। বর্ণনা করেন মাদ্রাসার একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে সিরাজ-উদ-দৌলার আপত্তিকর দৃশ্যের।

এরপর ৫ জুলাই মামলার সাক্ষ্য দেন মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন।

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত পরীক্ষায় অংশ নিতে মাদ্রাসায় গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ডেকে কৌশলে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। পরে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পাঁচ দিন পর ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের।

পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।

এ মামলায় পিবিআই ও পুলিশ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার দায় স্বীকারকারী পাঁচজনসহ মোট ১২ জন স্বীকারোক্তি দেন।

পরবর্তী সময়ে গত ২৯ মে নুসরাত হত্যা মামলার তদন্তকারী কমকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর শাহ আলম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে ১৬ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন। অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে এর বাইরে থাকা পাঁচ ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত।