ঋণখেলাপিরা বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন, হাইকোর্টের আদেশ আপিলে স্থগিত

Looks like you've blocked notifications!

ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা বিজ্ঞপ্তির ওপর হাইকোর্টের দেওয়া স্থিতাবস্থা দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা পেতে বাধা নেই।

আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে অর্থ বিভাগের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের জানান, মোট ঋণের দুই শতাংশ এককালীন জমা দিয়ে একজন ঋণখেলাপি ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন—বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নীতিমালার কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্ট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছিলেন।

এই আদেশ আরো দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। তবে এ সময়ে ওই নীতিমালার সুবিধাভোগীরা নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

এর আগে গত ২ জুলাই আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের করা স্থগিতের আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের আদেশ ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে এ দিন শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি হয় আপিল বিভাগে।

গত ২৪ জুন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ দুই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তির ওপর দুই মাসের স্থিতাবস্থার আদেশ জারি করেছিলেন।

ওই দিন বাংলাদেশে ব্যাংকের পক্ষে ঋণখেলাপিদের তালিকা আদালতে জমা দেওয়া হলেও তা প্রকাশ করেনি রাষ্ট্রপক্ষ। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে বলেন, তালিকা গোপনীয়তার স্বার্থে প্রকাশ করা হয়নি। তবে ১০ হাজার ৪৭৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপরীতে দুই লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে বলে আদালতে জানানো হয়েছে।

এর মধ্যে এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে। আর আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ৮০ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে। এর মধ্যে ৩৮ হাজার কোটি টাকার ঋণের হদিসই পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত ১৬ মে ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা’ শিরোনামে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খেলাপি ঋণের অনারোপিত সুদ মওকুফ সুবিধার পাশাপাশি খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যাংকের দায়ের করা মামলা স্থগিত রাখার পাশাপাশি যাঁরা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেন, তাঁরা সুদে ১০ শতাংশ রেয়াত পাবেন।

এ বিজ্ঞপ্তির পর একটি সম্পূরক আবেদন করে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। শুনানি শেষে গত ২১ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ঋণখেলাপির তথ্য ২৪ জুনের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দেন আদালত।