কিশোরগঞ্জে শিশু অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন

Looks like you've blocked notifications!

দলবেঁধে শিশু ধর্ষণের দায়ে কিশোরগঞ্জে চারজনকে যাবজ্জীবন  কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে অতিরিক্ত আরো দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া অপহরণের অভিযোগে প্রত্যেক আসামিকে পৃথকভাবে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে অতিরিক্ত আরো এক বছর করে কারাদণ্ডের সাজা দেন বিচারক। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের বিচারক কিরণ শংকার হালদার এই রায় ঘোষণা করেন।

দুটি সাজাই একত্রে কার্যকর হবে বলে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১-এর পিপি অ্যাডভোকেট এম এ আফজল জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রায় ঘোষণার সময় সব আসামিই এজলাশে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে সব আসামিকে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সাজা পাওয়া চার আসামি হচ্ছেন সুমন (২৪), ফারুক (২৬), রুমন (২২) ও হেলাল (৩৫)। তাঁরা করিমগঞ্জ পৌরসভার আশুতিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১২ মে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে অসুস্থ মাকে ভর্তি করে রাতের বেলায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ১১ বছর বয়সী ওই শিশু তার বাবা ও চাচার সঙ্গে রিকশায় করে বাড়ি ফিরছিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে গুজাদিয়া ইউনিয়নের রামনগর এলাকায় শাহ আলীর মাজারের কাছে পৌঁছামাত্র দুটি মোটরসাইকেলে আসামিরা রিকশাটির গতিরোধ করে। আসামিরা প্রথমে বাবা ও চাচাকে, পরে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা রিকশাচালককে বেদম মারধর করে শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে অনেক খোজাখুঁজির পর ভোর বেলায় স্থানীয় সেলঙ্গা সেতুর কাছ থেকে শিশুটিকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ওই দিনই শিশুটির বাবা বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে করিমগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। রক্তাক্ত ও অচেতন শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ সদরে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা ধর্ষণের আলামত পান এবং শিশুটি আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা করিমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মুঈদ চৌধুরী ছয় মাস তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর বাদীর এজাহারভুক্ত চারজন এবং নয়ন নামের আরেকজনসহ পাঁচজনের নামে অভিযোগপত্র দেন। তবে প্রদত্ত রায়ে বিচারক নয়নকে বেকসুর খালাস দেন।

আসামিপক্ষে মো. মহিউদ্দিন আহমেদ মামলাটি পরিচালনা করেন।