অবশেষে জেলে গেলেন উমেদার থেকে জমিদার হওয়া মান্নান

Looks like you've blocked notifications!
১১০ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলায় বাগেরহাটের অবসরপ্রাপ্ত উমেদার আবদুল মান্নান তালুকদারকে আজ সোমবার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। এ সময় মান্নানের সহযোগীরা ছবি তুলতে বাধা দেন। ছবি : এনটিভি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ১১০ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলায় অবশেষে বাগেরহাটের সেই উমেদার আবদুল মান্নান তালুকদারকে জেলে পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিচারক গোলক চন্দ্র বিশ্বাস জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাওনা মিয়া জানান, দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর অনেকটা গোপনে সোমবার বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান তালুকদার। তাঁর পক্ষে আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আজাদ ফিরোজ টিপুসহ অর্ধশত আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। এ সময় দুদকের প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিলন কুমার ব্যানার্জি জামিনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পরে পুলিশ সদস্যরা আবদুল মান্নান তালুকদারকে বিশেষ মর্যাদায় জেলা কারাগারে নিয়ে যায়। এই সময় ছবি নিতে গেলে আবদুল মান্নান তালুকদারের সহযোগীরা সাংবাদিকদের বাধা দেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক আরো জানান, মান্নান তালুকদারকে দ্রুত রিমান্ডে এনে গ্রাহকদের টাকা উদ্ধারের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

আবদুল মান্নান তালুকদারকে নিয়ে এনটিভি অনলাইন, এনটিভির ক্রাইম ওয়াচসহ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এসব প্রতিবেদনে বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, নড়াইল ও যশোর এলাকার সহজ-সরল মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে চার বছরে অর্থ দ্বিগুণ করার প্রলোভন দেখিয়ে ৪০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় মান্নান তালুকদারের প্রতিষ্ঠানটি। মাঠকর্মী হিসেবে চরমোনাই পীর সাহেবের অনুসারীদের ব্যবহার করেন তিনি।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর অনুসন্ধানে নামে দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্তে মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পাওয়ায় দুদককে মামলা করার সুপারিশ করে।

দীর্ঘ তদন্তের পর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাওন মিয়া বাদী হয়ে গত ৩০ মে বাগেরহাট সদর থানায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ১১০ কোটি ৩১ লাখ নয় হাজার টাকা প্রতারণা ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করার অভিযোগে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ২ [গ] ধারায় মামলা করেন। মামলায় নিউ বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান তালুকদার ও চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমানকে আসামি করা হয়েছিল।

দুদক কর্মকর্তা শাওন মিয়া জানান, ১১০ কোটি টাকার যে কাগজপত্র তারা পেয়েছেন তা শুধু প্রতিষ্ঠানটির বাগেরহাট শাখার। খুলনা বা অন্য কোনো শাখা অফিসের কোনো হিসাবপত্র পাওয়া যায়নি।

তবে এনটিভির কাছে আবদুল মান্নান তালুকদার নিজে তাঁর আমানত দুই হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিলেন বলে স্বীকার করেছিলেন।