খাস কামরায় আসামি হত্যায় পুলিশের মামলা, আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার
কুমিল্লায় আদালতে বিচার চলার সময়ে বিচারকের খাস কামরায় ঢুকে বিচারকের সামনে ফারুক নামের এক আসামিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সময় আদালতে অন্য মামলায় হাজির থাকা জেলার বাঙ্গরা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফিরোজ আহমদ বাদী হয়ে অভিযুক্ত হাসানকে আসামি করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় এই হত্যা মামলা করেন।
এদিকে এ ঘটনার পর আজ মঙ্গলবার কুমিল্লা আদালত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ভোর থেকেই বিচার কাজে নিয়োজিত আইনজীবী, বিচার প্রার্থী ও হাজিরা দিতে আসা বিভিন্ন মামলার সাক্ষী ও আসামিদের প্রবেশদ্বারে দেহ তল্লাশি করা হয়। পুরো আদালত এলাকা পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে।
তবে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম। তিনি জানান, কুমিল্লার আদালতে নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত আছে মাত্র ৭৩ জন, যেখানে আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রয়োজন ৩০০ থেকে ৪০০ সশস্ত্র পুলিশের।
পুলিশের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক মো. সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, বাঙ্গরা থানার এএসআই ফিরোজ আহমদ বাদী হয়ে ফারুকের হত্যাকারী হাসানকে একমাত্র আসামি করে ওই মামলাটি করেন। হাসানের বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ভোজপাড়ায়।
গতকাল সোমবার কুমিল্লা আদালতে বিচার চলার সময়ে এজলাস অতিক্রম করে খাস কামরায় ঢুকে বিচারকের সামনে এক আসামি অন্য আসামিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। ২০১৩ সালে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের কান্দি গ্রামে হাজি আবদুল করিম হত্যার ঘটনা ঘটে। সোমবার ওই মামলার জামিনে থাকা আসামিদের হাজিরার দিন ধার্য ছিল। বেলা ১১টার দিকে এ মামলার আসামিরা আদালতে ঢোকার সময় ৪ নম্বর আসামি ফারুককে ছুরি নিয়ে তাড়া করেন ৬ নম্বর আসামি হাসান। এ সময় জীবন বাঁচাতে ফারুক বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করেন। হাসান সেখানে ঢুকে টেবিলের ওপর ফেলে ফারুককে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাঁকে ওই কক্ষের ফ্লোরে ফেলেও আঘাত করেন হাসান। এ সময় আদালতে অন্য একটি মামলার হাজিরা দিতে আসা কুমিল্লার বাঙ্গরা থানার এএসআই ফিরোজ আহমদ এগিয়ে গিয়ে হাসানকে আটক করে। এ সময় আদালত কক্ষে বিচারক, আইনজীবী ও অন্য আসামিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সবাই ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করে। গুরুতর আহত ফারুককে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।