রাজশাহীতে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর ফাঁসির আদেশ

Looks like you've blocked notifications!
রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া ভোলাবাড়ি গ্রামে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আয়নাল হককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার পর তাঁকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। ছবি : এনটিভি

রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া ভোলাবাড়ি গ্রামে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আয়নাল হককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক ও.এইচ.এম ইলিয়াস হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আয়নাল হক (৩০) পবা উপজেলার বায়া ভোলাবাড়ি গ্রামের একরাম আলীর ছেলে।

পবা উপজেলার মদনহাটি গ্রামের জয়নাল আবেদীন ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল নগরীর শাহ মখদুম থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, ১০ বছর আগে একই উপজেলার বায়া ভোলাবাড়ি গ্রামের আয়নাল হকের সঙ্গে তাঁর মেয়ে সাফিয়া খাতুন ওরফে বুলবুলির (২৫) বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে সাগর নামে ৮ বছরের এক ছেলে সন্তান আছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, তুচ্ছ ঘটনায় প্রায়ই সাফিয়াকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন আয়নাল। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল সকালে সাফিয়া বাড়ির পাশে গরুর গোবর দিয়ে নোন্দা (জ্বালানি) তৈরির কাজ করছিলেন। হঠাৎ আয়নাল ছুরি হাতে সাফিয়ার ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে তাঁকে মাটিতে ফেলে দিয়ে জবাই করেন। ঘটনা দেখে আয়নালের বড় ভাই মৃত বাবুর স্ত্রী সোমা (২৫) বাঁচাতে ছুটে এলে তাঁকেও ছুরিকাঘাত করেন আয়নাল। ঘটনার পর আহত সোমাকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয়রা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। অন্যদিকে আয়নাল হককে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিলে রাজশাহী মহানগর দায়রা ও জজ আদালতে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ দুপুর ১২টার দিকে রায় ঘোষণা করেন ও.এইচ.এম ইলিয়াস হোসাইন। রায় ঘোষণার সময় আয়নাল হক আদালতের কাঁঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট এহসান আহম্মেদ শাহীন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের জানান, আয়নাল হক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্ত্রী সাফিয়া খাতুন বুলবুলিকে হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। এ ছাড়া হত্যার ঘটনা ঘটেছিল প্রকাশ্যে। প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরাও আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আয়নালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। তবে আসামি ঘোষিত রায়ের বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।

এদিকে, রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আয়নাল হকের মা শাহেদা বেগম। ছেলের ফাঁসির রায় শুনে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁর দাবি, আয়নাল মানসিক ভারসাম্যহীন। আয়নাল শ্রমিকের কাজ করত। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে সে একদিন কাজে গেলে চার দিন বসে থাকত। আর সারাক্ষণ বাড়িতে বক বক করত।

রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে শাহেদা বেগম বলেন, ছেলের সাজা কমানোর জন্য তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।