এবার ঘুষ লেনদেনের মামলায় ডিআইজি মিজান গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমান। পুরোনো ছবি : এনটিভি

ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েস এ আদেশ দেন।

দুদকের সরকারি কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল এ বিষয়ে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

ডিআইজি মিজানকে আজ বিকেলে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাঁকে আদালতের কাঁঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। দুদক কর্মকর্তা মামলাটি আদালতে উপস্থাপন করলে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানি শুরু করেন। কাজল শুনানিতে বলেন, এটা একটা দৃষ্টান্তমূলক মামলা হওয়া উচিত। যেন আর কেউ ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করতে না পারে। তাই এ মামলায় ডিআইজি মিজানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করছি।

অপরদিকে ডিআইজি মিজানের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী শুনানিতে বলেন, বিশেষ কোনো মামলায় বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের মামলায় অভিযোগপত্র দাখিলের পূর্ব পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট আদালতের কোনো আদেশ দেওয়া ঠিক নয়। সেটি জামিন, গ্রেপ্তার কিংবা যে বিষয় থাকুক না কেন।

আইনজীবী শুনানিতে বলেন, আমি বলতে চাই মিজান সাহেবের বিরুদ্ধে যে মামলার অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। এ মামলার আসামি প্রকৃতপক্ষে নির্দোষ।

এজাহার থেকে জানা যায়, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে দুদকে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত একটি অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন ছিল। সেই অভিযোগের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা ছিলেন এ মামলার অপর আসামি দুদক পরিচালক (সাময়িক বরখাস্ত) এনামুল বাছির। ডিআইজি মিজান সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নিজের বিরুদ্ধে আনা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ হতে অব্যাহতি পাওয়ার আশায় অর্থাৎ অনুসন্ধানের ফলাফল নিজের পক্ষে নেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে মামলার অপর আসামি এনামুল বাছিরকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করার জন্য অবৈধ পন্থায় অর্জিত অপরাধলব্দ আয় থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে হস্তান্তর করে পরস্পর যোগসাজসে অপরাধ করেছেন।

এ অভিযোগে গত ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ১-এ দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা শেখ মো. ফানাফিল্যা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে গত ২ জুলাই তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের  মামলায় ডিআইজি মিজানুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।

গত ১ জুলাই ডিআইজি মিজানুর রহমান হাইকোর্টে আগাম জামিন চাইলে তাঁর আবেদন নাকচ করে সঙ্গে সঙ্গে কাস্টডিতে (হেফাজতে) নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন আদালত। পরে পুলিশ তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। এ ছাড়া তাঁর ভাগ্নে উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসানকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত ১৯ জুন মিজানুর রহমানের স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসেবের লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দেন আদালত।

নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছিল দুদক। কিন্তু এই তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান।

গণমাধ্যমে বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পরই এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। যদিও পরিচালক এনামুল বারবার দাবি করেন, রেকর্ড করা বক্তব্যে তাঁর কণ্ঠ নকল করা হয়েছে। পরে এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পৃথক অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুদক।