হাইকোর্টের রায়

‘অ্যালায়েন্স’ যে প্রক্রিয়ায় সম্পর্ক ছিন্ন করে তা অবৈধ

Looks like you've blocked notifications!

বাংলাদেশি পোশাক কারখানাগুলোর সঙ্গে উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট ‘অ্যালায়েন্স’ যে প্রক্রিয়ায় সম্পর্ক ছিন্ন করে তা অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ রায়ের ফলে কোনো পোশাক কারখানার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হলে সরকার অথবা বিজিএমইএর সঙ্গে  অ্যালায়েন্সকে বসতে হবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আদালত।

আদালত বলেন, ‘মৌলিক অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকের প্রতিষ্ঠিত কোনো কোম্পানি দেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।’

আজ সোমবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলামএবং অ্যালায়েন্সের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম । 

ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের নিরাপত্তার জন্য ইউরোপিয়ান ক্রেতাদের একটি সংগঠন হয়, যার নাম অ্যাকর্ড। আর উত্তর আমেরিকান ক্রেতারা অ্যালায়েন্স নামে একটি সংগঠন করে। তাদের কাজ ছিল বাংলাদেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলো নিরাপদ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা। এ ক্ষেত্রে তারা সরকারের অনুমতি ছাড়া বিজিএমইএর সঙ্গে কোলাবোরেট ছাড়াই আমাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করে দিত। তারা এটি স্বৈরাচারিভাবে করত। এভাবে কাজ করায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে ২০১৭ সালে একটি মামলা হয়। ওই মামলার শুনানি শেষে আজ কোর্ট দুটো রায় দিয়েছেন। তার মধ্যে একটি হলো বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্বারা তৈরি কোনো কোম্পানি একজন নাগরিকের মতো সংবিধানের মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। এ ছাড়া, আদালত বলেছেন, কোনো কারণ ছাড়া, সরকারি অনুমোদন ছাড়া বাংলাদেশের কোনো ফ্যাক্টরিকে বন্ধ করে দেওয়া অবৈধ।’

ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম বলেন, ‘রানা প্লাজার ঘটনার পর গার্মেন্টসের নর্থ আমেরিকান ক্রেতা জোট ২০১৩ সালে বাংলাদেশে অ্যালায়েন্স নামে একটি অনুসন্ধানী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে। এর দায়িত্ব বাংলাদেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কর্মপরিকল্পনা, আগুন এবং ভবন নিরাপত্তা পরিদর্শন, কর্মী প্রশিক্ষণ এবং কর্মীদের ক্ষমতায়নের ওপরে নিবদ্ধ ছিল।’ তিনি আরো বলেন,‘সরকার অ্যালায়েন্সকে বাংলাদেশে আসার সুযোগ দিয়েছিল রানা প্লাজার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার লক্ষ্যে। কিন্তু তারা নিজেদের মতো করে গার্মেন্টসগুলোর বিরুদ্ধে খবরদারি এবং জোটের সঙ্গে অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্নে করে, যা অবৈধ। তবুও তারা নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো রকম অনুসন্ধান না চালিয়ে অবৈধভাবে জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। এতে প্রতিষ্ঠানটি সাংঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের আমেরিকান সব ক্রেতা মুখ ফিরিয়ে নেয়। এরপর তারা হাইকোর্টে মামলা করে। সে মামলার শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করলেন। একইসঙ্গে জোটের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে গার্মেন্টসের নতুন নিরাপত্তা বিধি নির্ণয় করতে বলেন আদালত।’