জ্বিনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ ও শিশুদের বলাৎকার করতেন তিনি

নারী ধর্ষণ ও কিশোর বলাৎকারের অভিযোগে দক্ষিণখান থেকে মসজিদের ইমাম ইদ্রিস আহাম্মেদকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ইদ্রিস মিথ্যা ঝাড়ফুঁক ও জ্বিনের ভয় দেখিয়ে সুন্দরী নারীদের জোর করে ধর্ষণ ও শিশুদের বলাৎকার করত। মসজিদের খাদেমদের দিয়ে আবার এসব ভিডিও করে ভয় দেখিয়ে পুনরায় ধর্ষণে বাধ্য করত।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান র্যাব ১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।
সংবাদ সম্মেলনে সারওয়ার জানান, রাজধানীর দক্ষিণখানের একটি মসজিদের ইমাম ইদ্রিস আহাম্মেদ (৪২)। পাশাপাশি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষকও। গত ১৮ বছর ধরে স্থানীয় অনেকের অসুস্থতায় সে ঝাড়ফুঁক ও তাবিজ-কবজ দিত। ঝাড়ফুঁক নেওয়াদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। বিশ্বস্ততার সুযোগ নিয়ে ঝাড়ফুঁক ও জিনের ভয় দেখিয়ে সুন্দরী মেয়েদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছিল সে। বাদ যায়নি মাদ্রাসা ও মসজিদে আসা শিশুরাও।
সম্প্রতি এক ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘসময় তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়ার পর ২১ জুলাই মধ্যরাতে র্যাব ১-এর একটি দল রাজধানীর দক্ষিণখান থানাধীন সৈয়দনগর এলাকা থেকে ইদ্রিস আহাম্মেদকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। ওই মোবাইল ফোনে ধর্ষণ ও বলাৎকারের অনেক ভিডিও ছবি পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে র্যাব।
অভিযুক্ত ইদ্রিস আহাম্মেদের বাড়ি সিলেট জেলায়। সে সিলেটের একটি মাদ্রাসা থেকে ১৯৯৮ সালে কামিল পাস করে। এরপর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের একটি মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করে। ২০০২ সালে ঢাকায় এসে দক্ষিণখানের ওই মসজিদে ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হয়। ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকায় ঝাড়ফুঁক এবং তাবিজ-কবজ বিক্রি করে। তার সঙ্গে জিন আছে মর্মে প্রচার ও কুকর্মের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। এ সুযোগ কাজ লাগিয়ে সে সুন্দরী নারীদের মিথ্যা ঝাড়ফুঁক ও জিনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। পরে অনেক নারীই আত্মসম্মান এবং কুসংস্কারের কারণে তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা কাউকে বলেনি।
আটক ইদ্রিস এলাকায় ইমামতির পাশাপাশি প্রায়ই অসুস্থ লোকজনকে ঝাড়ফুঁক ও তাবিজ-কবজ দিত। ইদ্রিস তার কাছে আসা নারী ও কিশোরদের মিথ্যা ঝাড়ফুক ও জ্বিনের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও বলাৎকার করত এবং সে ভিডিও সে ধারণ করে রাখত। ভিকটিমরা আত্মসম্মান ও কুসংস্কারের কারণে তাদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা কাউকে বলত না।
ইদ্রিস আহাম্মেদ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মসজিদের একটি বিশেষ কক্ষে সে ঘুমাত। তার সব অপকর্ম ওই কক্ষেই সম্পন্ন হতো এবং তার এই অপকর্মের ভিডিওগুলো সে তার খাদেমদের দিয়ে ধারণ করাতে বাধ্য করত। এ পর্যন্ত ইদ্রিস একাধিক নারীর সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে বলে স্বীকার করেছে। জিন নিয়ে তার প্রতারণা মিথ্যা।