গুজব-গণপিটুনি-ধর্ষণের বিরুদ্ধে উত্তরায় মানববন্ধন

Looks like you've blocked notifications!
গুজব-গণপিটুনি-ধর্ষণের বিরুদ্ধে আজ বুধবার রাজধানীর উত্তরায় মানববন্ধনের আয়োজন করে চাইল্ড হ্যাভেন স্কুল। ছবি : সংগৃহীত

গুজব-গণপিটুনি-ধর্ষণের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরায় মানববন্ধন করা হয়েছে। উত্তরার ৪ নম্বরের সেক্টরের চাইল্ড হ্যাভেন স্কুলের উদ্যোগে আজ বুধবার এই মানববন্ধন করা হয়।

সকালে বিদ্যালয়ের সামনে একবার, পরে পাশেই উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আফছার উদ্দিন খান, স্কুলের পাঁচ শতাধিক ছাত্রছাত্রীসহ সহস্রাধিক অভিভাবক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন।

দেশব্যাপী চলমান পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথার প্রয়োজন সংক্রান্ত গুজব এবং এ গুজবকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের গণপিটুনিতে নিরীহ মানুষদের মর্মান্তিক মৃত্যু ও শিশু ধর্ষণের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক ব্যানার ও ফেস্টুন প্রর্দশন করা হয়। এতে লেখা ছিল-‘পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে-এটা একটা গুজব, আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না, প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিন’; ‘পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে না থেকে গণপিটুনি প্রতিরোধ করুন’; ‘আমি মা, ছেলেধরা নই’; ‘আমার মা-বাবাকে মারবেন না’; ‘আমি মেয়ে, নিরাপত্তা চাই’; ‘চকলেট চাই না, নিরাপত্তা চাই’; ‘হায়েনাদের রুখে দিতে প্রয়োজন একদল মানবিক মানুষ’; ‘শিশু নির্যাতন বন্ধ করো’ ইত্যাদি।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কাউন্সিলর মো. আফছার উদ্দিন খান এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য চাইল্ড হ্যাভেন স্কুলের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকমণ্ডলী ও এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, দেশবিরোধী শক্তি পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে- এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আর কতিপয় সুযোগ সন্ধানী বিকৃত মস্তিষ্কের অপরাধী নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। এর বিরুদ্ধে দেশের সব সচেতন মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ অনাচার প্রতিহত করতে হবে। যারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন  তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

চাইল্ড হ্যাভেন স্কুলের অধ্যক্ষ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, অশিক্ষা, মাদকের ব্যবহার এবং পরিবার, সমাজ ও বিদ্যালয় থেকে নৈতিক শিক্ষার অভাবে আজ সামাজিক অবক্ষয় চরম আকার ধারণ করেছে। ফলশ্রুতিতে কতিপয় মানুষ মনুষ্যত্ব হারিয়ে বিবেক বর্জিত শয়তানের দোসরে পরিণত হয়েছে। সমাজকে এ পচনের হাত থেকে রক্ষার জন্য পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে শিশু ও যুব সমাজের মনে ন্যায় ও নীতিবোধের চেতনা প্রোথিত করতে হবে। তাদের মধ্যে মানবিক গুণাবলি জাগিয়ে তুলতে হবে। তাহলেই আমরা একটা বিবেকসম্পন্ন জাতি পাব, যারা শুধু নিজেরা অন্যায় করবে না এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।

এ ধরনের একটি মহতী উদ্যোগের জন্য এলাকাবাসী স্কুল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।