চুয়াডাঙ্গার সেই মাদ্রাসাছাত্রের কাটা মাথা উদ্ধার

Looks like you've blocked notifications!
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় নিহত মাদ্রাসাছাত্র আবির হুসাইনের (ইনসেটে) কাটা মাথা বৃহস্পতিবার কয়রাডাঙ্গা নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার পাশের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। ছবি : এনটিভি

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় নিহত মাদ্রাসাছাত্র আবির হুসাইনের কাটা মাথা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কয়রাডাঙ্গা নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার পাশের একটি পুকুর থেকে আবিরের ছিন্ন মাথা উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে নিখোঁজ হয় নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আবির। পরদিন সকালে মাদ্রাসার অদূরে একটি আমবাগানের ভেতর থেকে তার মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দিনভর অভিযান চালিয়েও পুলিশ ও ঢাকা থেকে আসা র‍্যাবের স্পেশাল ডগ স্কোয়াড আবিরের বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধারে ব্যর্থ হয়।

অবশেষে আজ সকাল থেকে চুয়াডাঙ্গা ও খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল মাদ্রাসার পাশের একটি পুকুরে অভিযান শুরু করে। সকাল ১০টার দিকে আবিরের বিচ্ছিন্ন মাথার সন্ধান মেলে।

এদিকে গতকাল উদ্ধার করা আবিরের মরদেহ পরীক্ষা করে তাকে যৌন নির্যাতন করার নমুনা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামীম কবীর।

এ হত্যাকাণ্ডের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার পাঁচ শিক্ষককে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান।

পুলিশ সুপার জানান, বলাৎকারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে খুব কৌশলে আবিরকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি দেশে চলমান ছেলেধরা গুজবের খাতে প্রবাহিত করতেই তার শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ রকম কোনো গুজবে কান না দিতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

মাহবুবুর রহমান আরো জানান, সদর হাসপাতালে আবিরের মরদেহ থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ ও সোয়াব টেস্টের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদনের পর খুনের প্রকৃত কারণ ও এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানা যাবে।

এ ঘটনায় নিহত আবিরের মা গোলাপী বেগম কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মুন্সী।

এর আগে নেত্রকোনায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। গত ১৮ জুলাই পৌর শহরের কাটলী এলাকার শিশু সজীবকে বলাৎকার করে রবিন নামের মাদকাসক্ত এক রিকশাচালক। এরপর শিশুটিকে গলা কেটে হত্যা করে রবিন। পরে শিশুটির কাটা মাথা নিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় লোকজন তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। সেদিন বিকেলে কাটলী এলাকায় নির্মাণাধীন তিনতলা একটি ভবনের নিচতলা থেকে শিশু সজীবের বাকি দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এই তথ্য জানান।

ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘সজীব নামের যে শিশুটি মারা গেছে, মৃত্যুর আগে রবিন তাকে বলাৎকার করেছিল। যার প্রমাণ পেয়েছি সুরহতাল এবং ময়নাতদন্তে।’

আইজিপি বলেন, ‘ঘটনার পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি, বলাৎকারের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুটি হয়তো প্রতিরোধ করতে চেয়েছিল, তাই তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। অথবা যেহেতু পরিচিত পরিবার ছিল দুজনের। শিশুটি ঘটনাটি তার পরিবারকে জানিয়ে দেবে, সেই চিন্তা থেকেও তাকে হত্যা করা হতে পারে।’  

জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘রবিন মাদকাসক্ত ছিল। মাদকাসক্তের কারণে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিল। অপরাধী কর্মকাণ্ডের জন্য ঘটনার কিছুদিন আগে পুলিশ তাকে আটকও করেছিল। এই মাদকাসক্তের কারণেই সে তার স্ত্রীকে নির্যাতন করত। শুধু তাই নয়, একসময় ব্লেড নিয়ে সে তার স্ত্রীরও গলা কাটার চেষ্টা করেছিল। এ জন্য স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়।’ এই রবিনের কারণেই তার বাবা সম্পত্তিগুলো বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন বলেও জানান জাবেদ পাটোয়ারী।