প্রত্যাবাসন ইস্যুতে যৌথ আলোচনায় সম্মত মিয়ানমার ও রোহিঙ্গারা
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে যৌথ আলোচনায় অংশ নিতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল ও রোহিঙ্গারা। ওই আলোচনায় মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা প্রতিনিধি ছাড়াও বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। তবে কবে নাগাদ এটি অনুষ্ঠিত হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ।
মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে আলোচনায় অংশ নেওয়া রোহিঙ্গারা এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের কেউ। কথা বলেননি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল উড়োজাহাজে করে শনিবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার পৌঁছান। প্রতিনিধি দলটি বিমানবন্দর থেকে ইনানী হোটেল রয়েল টিউলিপে যান। সেখানে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হন। বৈঠক শেষে দুপুর ১টার দিকে তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা দেন। দুপুর দেড়টা থেকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এ সময় রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর প্রতিনিধি দলটি ১২ জন নারী ও ২৮ জন পুরুষসহ ৪০ জন রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করেন।
আলোচনায় রোহিঙ্গাদেরকে নিজ দেশে ফিরে যেতে আহ্বান জানান মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে ফিরে গেলে সেখানে কী কী সুযোগ সুবিধা পাবেন সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। এ সময় রোহিঙ্গাদের পক্ষে নানা দাবি উত্থাপন করা হয়। দুই দিনের সফরে মিয়ানমারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আহা সেন্টারের একটি প্রতিনিধি দলও।
বৈঠকে অংশ নেওয়া কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, প্রত্যাবাসনের নিরাপদ পরিবেশ নিয়ে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের প্রস্তাবে রোহিঙ্গারা আশ্বস্ত হতে পারেননি। তবে বৈঠকে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে যৌথ আলোচনায় সম্মতি জানিয়েছেন মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা।
রোববার রোহিঙ্গা হিন্দু ক্যাম্প ও কুতুপালং এক্সটেনশন ৪ নম্বর ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন।
রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, আমাদেরকে অ্যাম্বাসি কার্ড দিবে বলেছে। কিন্তু আমরা তো পুরাতন সিটিজেন। আমরা বলেছি, এটা কখনো গ্রহণ করব না আমরা। আমরা চাই সিটিজেনশিপ। তাছাড়া সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও খুবই দুর্বল।
প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তাদেরকে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হয়নি বলে জানান দিল মোহাম্মদ। তবে নতুন করে আলোচনায় বসতে উভয়পক্ষ রাজি হয়েছে বলে জানান তিনি।