হাইকোর্টে প্রতিবেদন

রাজধানীর পাতলা খান ও মিরপুরের পানিশোধন হয়েছে

Looks like you've blocked notifications!

ঢাকা ওয়াসার পাতলা খান লেন ও মিরপুর জোনের পানিশোধন করা হয়েছে মর্মে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

বুয়েট ও ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন ওয়াসার আইনজীবী।

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে জানান, ওই দুই জোনের পানিশোধন করা হয়েছে। পরে স্যাম্পল (নমুনা) নিয়ে টেস্ট  প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

আদালতে ওয়াসার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাসুম। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।

পানি পরীক্ষায় আদালতের নির্দেশে গঠিত চার সদস্যের কমিটির প্রতিবেদন গত ৭ জুলাই আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সে প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের ৩৪টি নমুনার মধ্যে আটটি পানির নমুনায় ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

গত ২৪ জুন আইনজীবী ব্যারিস্টার মাছুম বলেন, ‘প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুসারে আমরা ওয়ান বাই ওয়ান কারেক্টিফিকেশনে গিয়েছি।’

সমন্বিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিটি ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের বিভিন্ন এলাকা থেকে দৈবচয়ন ও দূষণের অভিযোগ রয়েছে এমন ৩৪টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে আটটি নমুনাতে ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ পাওয়া গেছে।

গত ১৬ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে পানি পরীক্ষাবিষয়ক একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার লিংকে (হটলাইন) গত তিন মাসে ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে ১০টি জোনের ৫৯ এলাকায় ময়লা পানির প্রবণতা বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, গত ১৪ মে পানি পরীক্ষা কমিটির তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং আইসিডিডিআর,বির ল্যাবে পানির বিভিন্ন প্যারামিটারের মূল্যহার একীভূত করে মোট বাজেট সংযুক্ত করা হলো।

বাজেটে বলা হয়, এই ১০টি জোনের প্রতিটি এলাকা থেকে ৩৫৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ফলে মোট নমুনার সংখ্যা দাঁড়াবে এক হাজার ৬৫টি। এই এক হাজার ৬৫টি নমুনা করে তিনটি ল্যাবরেটরিতে রোগজীবাণু ও ভৌত রাসায়নিক সংক্রান্ত পরীক্ষা করতে খরচ হবে মোট ৭৫ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা।

এ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে মতামত শুনতে ওই কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের (মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্ট) চেয়ারম্যান ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমানকে আদালতে আসতে বলেন।

এ আদেশ অনুসারে অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান গত ২১ মে হাইকোর্টে আসেন। ওই আদালতে অধ্যাপক সাবিতা বলেন, “যেসব পানিতে ময়লা দেখা যাচ্ছে বা ঘোলা, সেটা তো পরীক্ষার দরকার নেই। সেটা রিজেক্টেড। যেটা সাধারণত স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এমন পরিষ্কার পানি পরীক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি, যা পান করে কোনো এলাকার রোগ ছড়াবার তথ্য মেলে। ওয়াসা যে রিপোর্ট দিয়েছে ৫৯ এলাকা নিয়ে, সেটা তো কয়েক মাস আগে। ওয়াসার পানির উৎস হলো ভূমিস্থ, ভূগর্ভস্থ, শীতলক্ষ্যা বা বুড়িগঙ্গা। এসব উৎসের পানি ‘সিজন টু সিজনে’ তারতম্য থাকতে পারে।”

পানি পরীক্ষার খরচের বিষয়ে অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান বলেন, ‘প্রতি স্যাম্পলে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হবে। সে ক্ষেত্রে ৩৪ স্যাম্পলে মোট এক লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে।’

এরপর আদালত এক আদেশে ৩৪ পয়েন্টে নমুনা সংগ্রহে পানি পরীক্ষা করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই আদেশ অনুসারে, গত ২৭ জুন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে তা হস্তান্তর করেন।

এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করার আদেশ দেন।

গত ১৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

কমিটির সদস্যরা হলেন—আইসিডিডিআর,বির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী মনিরুল আলম, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম বদরুজ্জামান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সাবিতা রিজওয়ানা রহমান।