হাইকোর্টে হাজির স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ
এডিস মশা নির্মূলে নতুন ওষুধ আনার বিষয়ে গড়িমসি করায় এবং কার্যকর সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ হাইকোর্টের তলবে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার আগে আদালতে হাজির হন তিনি। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি সোহরাওয়ারদীর বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে সকালে এ সচিবকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।
এর আগে শুনানিতে সিটি করপোরেশনের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, ‘ওষুধ আনবে সরকার। আমরা শুধু প্রয়োগ করব। গত পরশু দিন আবেদন করেছি। এখনো কোনো কিছুই হয়নি, পড়ে রয়েছে। কোনো কিছুই হচ্ছে না। এই প্রসেস কখনোই শেষ হবে না।’
আদালত বলেন, ‘আমরা ১৬ দিন আগে রুল দিয়েছি। সরকার কি কোনো কাজ করছে না?’ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘মিটিং হয়েছে। ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
আইনজীবীরা আদালতকে জানান, বিশেষ বিমানে করে মশা নিধনের নতুন ওষুধের নমুনা আজকের মধ্যে দেশে আসবে বলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আইনজীবীরা হাইকোর্টে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ওই নমুনা ওষুধের কার্যকারিতার ওপর মহাখালীর একটি ল্যাবরেটরিতে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা চালানো হবে বলেও তাঁরা আদালতকে জানিয়েছেন।
তবে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘যখন মশার প্রকোপ শুরু হলো, তখন আপনারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি? দুই সিটি কপোরেশন মশক নিধনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চেকে আইনজীবীরা এসব তথ্য দেন।
আদালতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়রা ফাইরোজ।
এর আগে গত ২৫ জুলাই ওষুধের ডোজ বাড়িয়ে দিয়ে এডিস মশা নির্মূল ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে এ সময়ের মধ্যে ওষুধ ব্যবহারে মশা নিধন হয়েছে কি না, সে বিষয়েও প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছিলেন আদালত।
কিন্তু মশা নিধনে কার্যকর ফল না পাওয়ায় গত ৩০ জুলাই এডিস মশা নিধনে কার্যকর ওষুধ কবে দেশে আসবে, তা সরকার এবং ঢাকার উভয় সিটি করপোরেশনকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার মধ্যে জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। যার ধারাবাহিকতায় ওষুধের বিষয়ে তাঁরা হাইকোর্টকে বিষয়টি অবহিত করেন।
এর আগে গত ১৪ জুলাই আদালত তাঁর আদেশে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
একই সঙ্গে নাগরিকদের ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়া বন্ধ করতে এবং এডিস মশা নির্মূলে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।
পরে ওই বিষয়ে দুই সিটির পক্ষ থেকে গত ২২ জুলাই হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। কিন্তু সে প্রতিবেদনে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব করলে গত ২৫ জুলাই তাঁরা সশরীরে হাজির হয়ে আদালতে ব্যাখ্যা দেন।