ডেঙ্গু শনাক্তকারী ১ কোটি ৬১ লাখ কিট সরবরাহ করবে ডিজিডিএ
রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। ফলে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিটের অভাব দেখা দিয়েছে। আর তাই সাতটি প্রতিষ্ঠানকে এক কোটি ৬১ লাখ ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট সরবরাহ করতে অনুমোদন দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ)।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, আগামী ৯ আগস্টের ভেতরে অনুমোদন দেওয়া এক কোটি ৬১ লাখ ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিকেল ডিভাইস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করার চিন্তা করছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
সূত্র আরো জানায়, এসটিপি লিমিটেড, নির্ঝরা ইন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স অরবিটাল ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন নামক তিনটি প্রতিষ্ঠান ৫০ লাখ করে মোট দেড় কোটি কিট সরবরাহ করবে। এ ছাড়া বায়ো ব্রিস্টাল নামে একটি কোম্পানি সাত লাখ ৭৪ হাজার ২৫০, মাল্টিপল হেলথ কেয়ার লিমিটেড দুই লাখ, মেসার্স হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সলিউশন লিমিটেড এক লাখ ২৫ হাজার এবং এম আর ট্রেডিং সাড়ে সাত হাজার কিট সরবরাহ করবে।
এদিকে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর সারা বাংলাদেশে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট সরবরাহ করার জন্য একটি কন্ট্রোল ইউনিট গঠন করেছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর আগামী ৯ আগস্টের ভেতরে সব কিট সরবরাহ করবে বলে চিন্তা করছে। সেভাবে যোগাযোগও করা হচ্ছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে।’
এদিকে অধিদপ্তরটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে গণমাধ্যমে। সেখানে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই ডেঙ্গু শনাক্তকরণের কিটের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ দেশে পৌঁছেছে এবং বিভিন্ন হাসপাতাল/ক্লিনিকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার মেসার্স এসটিপি নামক একটি প্রতিষ্ঠান ৬৫ হাজার পিস ডেঙ্গু শনাক্তকরণের কিট আমদানি করেছে। এগুলো বিভিন্ন মেডিকেল ডিভাইস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। যেমন : মিটফোর্ড এলাকায় ৩৫ হাজার, চট্টগ্রাম এলাকায় ১৫ হাজার এবং বিএমএ ভবনের বিভিন্ন মেডিকেল ডিভাইস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালে ১৫ হাজার কিট সরবরাহ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, মেসার্স এমআর ট্রেডিং ছয় হাজার ৫০০ পিস ও মেসার্স সোহাগ সার্জিক্যাল ৭০০ পিস ডেঙ্গু শনাক্তকরণের কিট আমদানি করেছে। যার বিভিন্ন মেডিকেল ডিভাইস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান/হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে।
এদিকে মেসার্স এসটিপি নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে আরো ৬৫ হাজার পিস ডেঙ্গু শনাক্তকরণের কিট আমদানির জন্য এনওসি/পূর্বানুমোদন প্রদান করা হয়েছে যা শুক্রবার দেশে পৌঁছাবে। এ ছাড়া মেসার্স হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সলিউশন লিমিটেড দুই লাখ ২৫ হাজার পিস ডেঙ্গু শনাক্তকরণের কিটস এবং মেসার্স অরবিটাল ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশনের দুই লাখ পিস ডেঙ্গু শনাক্তকরণের কিট শুক্রবার দেশে পৌঁছাবে। অন্যদিকে মেসার্স অরবিটাল ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন আরো পাঁচ লাখ পিস ডেঙ্গু শনাক্তকরণের কিটস আমদানি করেছে যা আগামী ৩ আগস্ট দেশে পৌঁছাবে।
কবে নাগাদ সব কিটস সরবরাহ করা সম্ভব হবে-এমন প্রশ্নে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ড্রাগ সুপার মনির আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে কিছুই জানাতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, ‘এসব কিটস চাইলে সাধারণ মানুষও কিনতে পারবে। কিছু সচেতন মানুষ হয়তো এই শনাক্তকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞাত। তাঁরা চাইলে কিনতে পারবেন। তবে অধিকাংশ মানুষই কিনবেন না। কারণ তাঁরা এর ব্যবহার জানেন না।’
মনির আহমেদ বলেন, ‘এখনো বাজারে এসব কিটস চাওয়া মাত্রই পাওয়া যাচ্ছে না। এখনো সংকট আছে, তবে আগামীকাল শনিবার থেকে এসব কিটস পাওয়া যাবে। এসব কিটসের সর্বোচ্চ দাম ৫০০ টাকার বেশি না নিতে নির্দেশনা দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।’