বাড়ছে আর্সেনিকে আক্রান্তের সংখ্যা, নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা

Looks like you've blocked notifications!
বগুড়ার বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ ‘লাল চিহ্ন’যুক্ত টিউবওয়েলের পানিই ব্যবহার করছে। ফলে বেড়ে চলেছে আর্সেনিকে আক্রান্তের সংখ্যাও। ছবি : এনটিভি

মানুষের শরীরে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা প্রতি লিটার পানিতে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। কিন্তু বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া, গাবতলী উপজেলার মাড়িয়া ও শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল গ্রামে প্রতি লিটার পানিতে পাওয়া গেছে ১ দশমিক শূন্য থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ আর্সেনিক। যে কারণে এসব এলাকায় বেড়েই চলেছে আর্সেনিকে আক্রান্তের সংখ্যা।

সরকারি ও বেসরকারিভাবে এসব এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হলেও নিরাপদ পানির কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বেশি মাত্রায় আর্সেনিক পাওয়া গেছে, এমন টিউবওয়েলের পানিই পান করছেন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন এ পানি ব্যবহারের ফলে তাদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা। আর যার শেষ পরিণতি ক্যানসার ও মৃত্যু।

এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর এ পানি ব্যবহারের ফলে তাদের হাতে-পায়ে চুলকানি হয়েছে। কারো কারো শরীরে দেখা দিয়েছে কালো কালো দাগ। অনেকে আবার খাবার অরুচির কথাও জানান। তাঁরা জানান, আর্সেনিকমুক্ত পানি না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই তাঁরা ‘লাল চিহ্ন’যুক্ত আর্সেনিক আছে, এমন টিউবওয়েলের পানি খাওয়াসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছেন।   

ভুক্তভোগী পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘আমার মা আর্সেনিকের কারণে ক্যানসার হয়ে মারা গেছেন। আমার ভাই আর মা কয়েক দিন আগে-পরে মারা গেছেন আর্সেনিকের কারণে।’

এ বিষয়ে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রশিদ হাবিব বলেন, ‘টিউবওয়েলের পানিতে প্রচুর আর্সেনিক, এ কারণে টিউবওয়েল তুলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অনেক লোক মারা গেছে। চারটি পরিবারে ১৯৮২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৯ জন লোক মারা গেছে।’

মানুষের পাশাপাশি আর্সেনিকে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদি পশুও। আর্সেনিকযুক্ত পানি দিয়েই চলছে ফসলের চাষ।  এ অবস্থায় সরকার দ্রুত নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করবে, এমন আশা এসব এলাকার মানুষের।

বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. অর্ধেন্দু দেব বলেন, ‘আক্রান্ত এলাকায় টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করে তাদের সচেতন করতে হবে। যেসব টিউবওয়েলে সহনীয় মাত্রার অধিক আর্সেনিক আছে, সেগুলোর পানি যাতে জনগণ পান না করে, সেদিকে তাদের সচেতন করে তুলতে হবে।’