ডেঙ্গুতে ৬ দিনে মাদারীপুরের চারজনের মৃত্যু

Looks like you've blocked notifications!
মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার উত্তর কৃষ্ণনগর গ্রামে নাদিরা বেগমের স্বজনদের আহাজারি। ছবি : এনটিভি

মাদারীপুরে এ পর্যন্ত ৫২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত এই জেলার চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে আজ শনিবার ভোরে বরিশাল নেওয়ার পথে নাদিরা বেগম (৩৮) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তিনি কালকিনি পৌর এলাকার উত্তর কৃষ্ণনগর গ্রামের শওকত আলীর স্ত্রী।

কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত নাদিরা বেগমকে তিন দিন আগে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শনিবার ভোরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে (শেবাচিম) নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। বর্তমানে কালকিনি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে খাদিজা ও বীথি আক্তারসহ চারজন ভর্তি আছেন।

এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. রেজাউল করিম বলেন, গৃহবধূ নাদিরা বেগমের ডেঙ্গু হয়েছিল। আজ ভোরে বরিশাল নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

এর আগে গত সোমবার ডেঙ্গু জ্বরে কালকিনি পৌর এলাকার ঠেঙ্গামাড়া গ্রামের বারেক বেপারীর বড় ছেলে জুলহাস বেপারী ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান।

গত বুধবার রাতে ঢাকার ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় শিবচর উপজেলার সলু বেপারীর কান্দি এলাকার বাবু খানের ছেলে ফারুক খানের (২২)।

ফারুকের স্বজনরা জানান, ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ২৪ জুলাই শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন ফারুক। পরে সেখান থেকে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুকের মৃত্যু হয়।

এরপর পরের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট এলাকার রুবেল হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তারের (২২)।

ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে গত ২৮ জুলাই রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন শারমিন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এদিকে মাদারীপুর সদর ও উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ৩০ জন রোগী ডেঙ্গুর জীবাণু নিয়ে মাদারীপুরে এসেছে।=

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (এমআরও) শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‌‘গত ৫ জুলাই থেকে এই পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। যাদের মধ্যে ২৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১১ জন। আমাদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সরকারি হাসপাতাগুলোতে ডেঙ্গু জ্বর শনাক্তকরণের কিট নেই। যে কারণে ডেঙ্গু শনান্ত করে রোগীরা এলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যদি কোনো রোগীর অবস্থার অবনতি হয়, তাহলে উন্নত চিকিৎসার জন্যে অন্যত্র রেফার করি। আমরা আগামী বছর ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট কেনার জন্য অর্থ বরাদ্দ চাইব।’