ডেঙ্গু জ্বরে মারা গেলেন পোশাককর্মী

Looks like you've blocked notifications!
মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা। ছবি : এনটিভি

মাদারীপুরের শিবচরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রিপন হাওলাদার (৩০) নামের আরো একজন মারা গেছেন। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

রিপন শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের রাজারচর গ্রামের হাবিবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে। ঢাকায় একটি গার্মেন্টে কাজ করতেন রিপন।

এর আগে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডেঙ্গু জ্বরে এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেছেন। রিপনসহ ওই জেলায় ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা হলো পাঁচ। 

জানা যায়, তিন দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা থেকে শিবচর যান রিপন। শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু শনাক্ত হয় তাঁর। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হতে নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। তবে রিপন ফরিদপুর হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাড়িতে চলে যান। গতকাল রাতে রিপনের অবস্থা গুরুতর হলে আবার শিবচর হাসপাতালে যান। ওই সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার গভীর রাতে রিপন মারা যান।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. মোকাদ্দেস আলী জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিপন নামের এক রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। রিপন ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে শিবচরে এসেছিলেন। তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বলা হলেও তিনি চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে চলে যান। এরপর গত রাতে আবার হাসপাতালে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ছাড়া মাদারীপুর জেলায় এ পর্যন্ত ৫৮ জনকে ডেঙ্গু রোগী হিসেবে শনাক্ত করেছেন জেলার চিকিৎসকরা। এর মধ্যে বেশিরভাগ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও ফরিদপুর পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল, শিবচর ও কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন ডেঙ্গু জ্বরে চিকিৎসাধীন। এসব রোগীকে নিয়ে দিশেহারা স্বজনরা।

মাদারীপুর স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রমতে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট এলাকার রুবেল হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তার (২২), বুধবার রাতে ঢাকার ইসলামিয়া ব্যাংক হাসপাতালে শিবচরের সলুবেপারীর কান্দি এলাকার বাবু খানের ছেলে ফারুক খান (২২) ও তার আগের দিন মঙ্গলবার কালকিনি উপজেলার পৌরসভার ঠেঙ্গামারা গ্রামের বারেক বেপারীর ছেলে জুলহাস বেপারী (৪৫) ঢাকায় মারা গেছেন।

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাদারীপুরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী ঢাকা বা অন্য জায়গা থেকে ডেঙ্গুর জীবাণু বহন করে এনেছেন। ২০ জন জেলার বিভিন্ন এলাকায় থেকে আক্রান্ত হয়েছেন। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের চিকিৎসকদের ডেঙ্গুর ব্যাপারে আলাদা মনিটর করতে বলা হয়েছে। ডেঙ্গু রোগ শনাক্তকরণে সরকারিভাবে ১২০টি কিট আছে, যার মধ্যে ৬০টি রাখা হয়েছে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে, বাকিগুলো অন্য সরকারি হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে।’

মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ৩৬ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শশাঙ্ক ঘোষ।