কামারপট্টিতে ব্যস্ততা, খুশি নয় ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই!

Looks like you've blocked notifications!
কারওয়ানবাজারে কামারপট্টিতে ছুরি-চাপাতির পসরা। ঈদুল আজহার আগে এসব দোকানের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ছবি : সাইফুল সুমন

আসন্ন ঈদুল আজহায় পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের কামারপট্টিতে। দিনরাত পরিশ্রম করে চাপাতি, ছুরিসহ নানা সামগ্রী তৈরি করে দোকানে সাজাচ্ছেন। কিন্তু বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বিক্রেতারা। এদিকে বেশি দামে অখুশি ক্রেতা। তবে ঈদের আগে বিক্রি বাড়বে বলে ধারণা দোকানিদের।

কারওয়ানবাজারের কামারপট্টিতে এসব জিনিস প্রস্তুতকারী মোট ১২টি প্রতিষ্ঠান আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কেউ ক্রেতাদের কাছে পাইকারিভাবে বিক্রি করেন আবার কেউ কেউ নিজেদের দোকানে সাজিয়ে রেখে খুচরা বিক্রি করেন। কারো ব্যবসাই ভালো যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা।

এদিকে ছেলে ধরে গলাকাটার মতো গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। সেই গুজবের প্রভাব পড়েছে কারওয়ানবাজারের কামারপট্টিতেও। কামারপট্টি থেকে চাপাতি কিংবা রামদা কিনে রাস্তায় যেতে ভয় পাচ্ছেন ক্রেতারা। যদিও বিক্রেতারা পণ্যের ভাউচার ও দোকানের কার্ড দিয়ে ক্রেতাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন।

আজ বুধবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারের কামার পট্টিতে গিয়ে কয়েকজন ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

কামারপট্টির ‘মা-বাবার দোয়া হার্ডওয়ার’ নামের একটি দোকানের মালিক মো. বজলুর রহমান। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আজ পর্যন্ত বিক্রি ভালো না। হয়তো আগামী শুক্রবার থেকে ক্রেতারা আসবে। গ্রামে গিয়ে কোরবানি করবে এমন লোকই এখনো পর্যন্ত কিনতে এসেছেন। তবে ঢাকার লোকজনও এসেছেন। আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ১৭ হাজার টাকা। অথচ কথা ছিল অন্তত ৪০ হাজার টাকা।’

বজলুর রহমান আরো বলেন, ‘এক ক্রেতা এক হাজার ২০০ টাকার মাল কিনেছেন কিন্তু রাস্তায় নিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছেন। লোকে যদি তাঁকে কল্লাকাটা (গলাকাটা) ভেবে গণপিটুনি দেয়! পরে তাঁকে আমি ভাউচার আর কার্ড দিয়ে বললাম, কোনো সমস্যা হলে কার্ড দেখাবেন। আজ সাত-আটজনের মতো ক্রেতা এই গুজবের কথা বলেছেন। তাঁরা সবাই শঙ্কিত। যদিও কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।’

মেহেদী হাসান মিরাজ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘সকাল থেকে ১০ হাজার টাকা বিক্রি করছি। ঈদের বেচাকেনা শুরু হবে আরো পরে। তখন দেখা যাবে দিনে এক লাখ টাকাও বিক্রি হবে। আর কেউ যদি বলে থাকে আমরা দাম বেশি নিচ্ছি তাহলে সে দামই জানে না।’

আজিজুর রহমান নামের এক ক্রেতা কোরবানির জন্য রামদা, চাপাতি কিনতে এসেছেন। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এরা অনেক বেশি দাম রাখছে। ইস্পাতের রামদার কেজি ৪০০ টাকা হওয়ার কথা কিন্তু এরা রাখছে ৬০০ টাকা। একটা চাপাতির দাম বেশি হলে ৬০০ টাকা হওয়ার কথা কিন্তু রাখছে ৮০০-১০০০ টাকা। ছুরি থেকে শুরু করে সব জিনিসের দাম অনেক বেশি রাখছে।’

দাম বেশি রাখার কথা বলেছেন নজিম উদ্দিন নামের আরো এক ক্রেতা। তিনি বলেছেন, ‘ঈদের এখনো অনেক বাকি থাকায় বেশি দাম চাচ্ছে। ঈদ যত কাছে আসবে তত দাম কমবে। বাড়ি কলাবাগান, দরকার হলে পরে আবার আসব।’

চাপাতি, রামদা, ছুরি ও বটি তৈরি করেন দুলাল কর্মকার। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দিনে খুব বেশি হলে একজনে ১০০ ছুরি বানাতে পারে। পাইকারি বিক্রি করি ৬০ টাকা করে। অথচ দোকানদাররা সেই ছুরি কমপক্ষে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে।’

আরেক ব্যবসায়ী মো. সিরাজ। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি চাপাতি কিংবা কোপছুরি যদি পাইকারি ৪০০ টাকা করে বিক্রি করি তাহলে ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ীরা ওই মাল কমপক্ষে ৬০০ টাকা বিক্রি করে।’