৯ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র
কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণের পর হত্যা মামলায় নয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সারোয়ার জাহান কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আল মামুনের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন স্বর্ণলতা বাসের চালক নুরুজ্জামান নূরু, হেলপার লালন মিয়া, বাসমালিক আল মামুন, রফিকুল ইসলাম রফিক, খোকন মিয়া, বকুল মিয়া, বোরহান উদ্দিন, আল আমিন ও স্বর্ণলতা বাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পারভেজ সরকার পাভেল। এদের মধ্যে শেষের তিনজন পলাতক। ধর্ষণ ও হত্যায় সরাসরি সম্পৃক্ত আসামি বোরহান উদ্দিনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, বাসের চালক নুরুজ্জামান নূরু, তার খালাতো ভাই বোরহান ও বাসের হেলপার লালন মিয়া তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তানিয়াকে বাসের ভেতর ধর্ষণের পর বাস থেকে ফেলে হত্যা করা হয়। মাথায় প্রচণ্ড আঘাতের ফলে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে তাঁর মরদেহ কটিয়াদী হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায় আসামিরা। অন্য ছয় আসামি তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। পলাতক বোরহান উদ্দিনসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণের পর হত্যা মামলার আসামিরা। ছবি : এনটিভি
গত ৬ মে রাতে ঢাকা থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পথে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন শাহিনুর আক্তার তানিয়া। তানিয়াকে বহনকারী স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসটি কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে আসার পর বাসের অন্য যাত্রীরা নেমে যান। কটিয়াদী থেকে বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পথে গজারিয়া বিলপাড় এলাকায় বাসের চালক ও সহকারীরা তানিয়ার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। পরে তানিয়ার মরদেহ কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে যায় তারা।
নিহত তানিয়া কটিয়াদীর লোহাজুড়ি ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে ও ঢাকার কল্যাণপুর এলাকার ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র নার্স ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে ওই দিন রাতেই বাসের চালক নুরুজ্জামান নূরু, হেলপার লালন মিয়া, আল আমিন ও আল মামুন এ চারজনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা করেন। এদের মধ্যে তিনজন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।