কিশোরগঞ্জে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই, কলেজছাত্রের মৃত্যু

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার বড়িবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ফেরদৌস আহমেদের ছেলে কলেজছাত্র ফরহাদ আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফরহাদ আহমেদ (২০) নামের এক কলেজছাত্র ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। আজ রোববার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।

ফরহাদ কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার বড়িবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ফেরদৌস আহমেদের ছেলে। ফরহাদ কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

এদিকে কিশোরগঞ্জে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে নতুন নতুন রোগী এবং ভিড় বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ প্রতি ঘণ্টায় প্রায় তিনজন রোগী নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ছয়শতে দাঁড়িয়েছে। ক্রমবর্ধমান রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সসহ সংশ্লিষ্টরা। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন জেলার নাগরিক সমাজ।

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নতুন আরো ৬৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে জেলার হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে মোট চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪৭ জন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ৫৯৭ জন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ ঢাকা থেকে ডেঙ্গুবাহী রোগী হলেও স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অন্তত ৭৬ জনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত এক শিশু মারা গেছে।

এদিকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে গুরুতর অবস্থায় রেফার্ড করা ডেঙ্গু রোগী কলেজছাত্র ফরহাদ আহমেদ (২০) আজ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। ফরহাদ গতকাল বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন। এর আগে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে তিন দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার জানান, আজ বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের সময় মারা যান ফরহাদ।

কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া জানান, তাঁর হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জন নতুন রোগী ভর্তিসহ মোট ৭১ রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।

বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. খালেকুল ইসলাম জানান, এখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন নতুন রোগী ভর্তিসহ ৩৭ রোগী চিকিৎসাধীন।

বাকি রোগীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেছেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা প্রদানে আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। বর্ধিত রোগীদের সামাল দিতে আমরা সীমিত সামর্থ্য নিয়েও চিকিৎসক ও নার্সরা ঈদের ছুটিতেও দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বেশির ভাগ রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।