অন্ধকারে বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হলো বিএনপি নেতার ভবন
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী হারুন আল রশীদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি ভবনের একাংশ রাতের অন্ধকারে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ওই ভবনের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালামাল ভাঙচুর ও লুট করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছে মালিকপক্ষ।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে শহরের সদর হাসপাতাল রোডে অবস্থিত ওই ভবনে এ ঘটনা ঘটে। তার আগে ওই ভবন এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয় দুর্বৃত্তরা। আজ সকালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও রেড ক্রিসেন্ট বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন আল রশীদ বর্তমানে কানাডায় চিকিৎসার জন্য রয়েছেন। ফলে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য তাঁকে বা তাঁর পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।
ভবনটির যে অংশটি ভাঙা হয়েছে, সেখানে ‘মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিএনপি নেতার কাছ থেকে ভবনটির এই অংশটি ভাড়া নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি পরিচালনা করছিলেন মো. আবদুল আজিজ।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সকালে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশীদের কাছ থেকে ভবনটি ভাড়া নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে নিয়ে আসছি। গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা বুলডোজার দিয়ে ভবনের সীমানাপ্রাচীর ও বেশ কয়েকটি মেশিনারি কক্ষ গুঁড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া এসিসহ বিভিন্ন মালামাল লুট এবং কয়েকটি গাছ কেটেও ফেলে তারা।’
গভীর রাতে ভাঙচুরের বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে আসেন আবদুল আজিজ। তিনি দাবি করেছেন, এতে তাঁর প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সকালে জেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনসহ দলের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। এর কিছু পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারলাম না, এমন হীনউদ্দেশ্য নিয়ে কে এসেছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। এবং আমরা আশা করব, প্রশাসনে যাঁরা আছেন, জেলা প্রশাসক আছেন, পুলিশ সুপার আছেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আছে, তারা বিষয়টি ইনস অ্যান্ড আউট করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীকে জানাক।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার এ ঘটনার নিন্দা জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়দের কয়েকজন জানান, যে জায়গাটি ভাঙা হয়েছে, তার পেছনে একটি জায়গা কিনে নিয়েছে শহরের একটি প্রভাবশালী মহল। তারা সেখানে একটি হাসপাতাল গড়ার পরিকল্পনা করছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। ভবনের এই অংশটি ভাঙার ফলে সেই জায়গাটিতে যাতায়াত সহজ হবে।