সোনার বাংলাদেশ গড়ে বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ শোধ করব : প্রধানমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধুর ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। ছবি : বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তাঁর দৃঢ় আশাবাদ পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, এর মাধ্যমেই আমরা জাতির পিতার রক্তঋণ শোধ করব।

প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন, প্রয়োজনে বুকের রক্ত দেব। আর সেই রক্তই তিনি দিয়ে গেছেন। আর আমাদের সেই রক্তঋণ শোধ করতে হবে তাঁর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে।’ তিনি বলেন, ‘পিতা তোমাকে কথা দিলাম আজকের দিনে, তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব। এটাই আমাদের অঙ্গীকার ।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধুর ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ধীরে ধীরে এটা পরিষ্কার হয়েছে যে এটা হত্যাকাণ্ড ছিলো। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি সেই বিজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এবং সে বিজয়কে ধুলিস্যাৎ করে দিয়ে স্বাধীনতার বিরোধীদের আবার ক্ষমতায় আনার, পুনর্বাসিত করা ও পাকিস্তানের ভাবধারা নিয়ে আসা। যে কারণে খুনিরা এই হত্যার পর পরেই প্রথম ঘোষণা দিয়েছিল ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ। যেটা পরবর্তীতে আর রাখতে সাহস পায় নাই, পরে পরিবর্তন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তাঁর আদর্শ আমাদের মাঝে আছে। সেই আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি।

এ সময় এদেশের মানুষের আস্থা-বিশ্বাস নিয়ে এবং সম্মান ধরে রেখে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু এইটুকুই বলব, আজকের দিনে শোকগাঁথা বুকে নিয়েও এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। শুধু আমার বাবার কথা চিন্তা করেই, তিনি কিভাবে কষ্ট সহ্য করেছেন, কিভাবে জীবনের সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন এই দেশের জন্য।’

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মেরিনা জামান অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন।

দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন দেশকে গড়ে তুলে জাতির পিতা যখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই চরম আঘাতটা আসে। অথচ তিনি বেঁচে থাকলে অথবা আর তিন-চারটা বছর বেঁচে থাকলেই বাঙালি জাতিকে একটা মর্যাদার আসনে নিয়ে আসতেন।

তাহলে বাংলাদেশের মানুষকে অনাহার অর্ধাহারে থাকার কষ্ট, বোমাবাজি, হত্যা ক্যু ষড়যন্ত্রের কষ্ট আর ভোগ করতে হতো না। বাংলাদেশ বিশ্বে অনেক আগেই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতো।

শেখ হাসিনা দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাকরুদ্ধ কন্ঠে বলেন, ‘সব হারিয়ে পেয়েছিলাম লাখো মানুষ। তাদেরকে আপন করে নিয়েছি। আর আওয়ামী লীগের অগণিত নেতা-কর্মী, মুজিব আদর্শের সৈনিক-তারাই আমাকে আপন করে নিয়েছে। সেখানেই পেয়েছি বাবা-মা-ভাইয়ের ভালোবাসা। এটাই আমার সব থেকে বড় শক্তি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা জিনিসই মাথায় রেখেছি যে, আমার বাবা এই দেশ স্বাধীন করেছিলেন, এই দেশকে গড়ে তুলতে হবে। এদেশের মানুষকে মানুষের মতো বাঁচার সুযোগ করে দিতে হবে, উন্নত জীবন দিতে হবে, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়তে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে আজকে বাংলাদেশকে বিশ্বে একটা মর্যাদার আসনে নিয়ে এসেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ সারাবিশ্ব বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারা অবাক হয়, এত দ্রুত কিভাবে একটা দেশ উন্নত হতে পারে।’

উত্তরে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেন, ‘হতে পারে তখনি যখন একটি জাতির স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যারা ত্যাগ স্বীকার করে এবং নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে, তারা যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলেই একটা জাতি উন্নত হয়, তাহলেই একটা জাতি এগিয়ে যেতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা পরাজিত শক্তির দোসর তারা যদি ক্ষমতায় থাকে তাহলে কোনো জাতি এগোয় না, কোনো জাতিই উন্নতি করতে পারে না।’