ছাগল ছিনতাইয়ের চেষ্টা, ছাত্রলীগ নেতা ধরাছোঁয়ার বাইরে
২১২টি ছাগল ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মুজাহিদ আজমী তান্নাসহ ছাত্রলীগের এজাহারভুক্ত বাকি আসামিদের খুঁজে পাচ্ছেনা পুলিশ।
আজ রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) গোপাল গণেশ বিশ্বাস এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
গোপাল গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর থেকে সব আসামি আত্মগোপনে আছে। চিন্তার কোনো কারণ নেই, দ্রুতই তাদের ধরে ফেলব। আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজীব ঘোষ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ মামলায় বর্তমানে তিনজন রিমান্ড শেষে কারাগারে আটক রয়েছেন। প্রধান আসামি মুজাহিদ আজমী তান্নাসহ বাকি আসামিদের খুঁজে পাচ্ছি না। সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। আমরা তাদের ধরার চেষ্টা চালাচ্ছি।’
এদিকে আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সহকারী জিআরও মো. হামিদুর রহমান এনটিভি অনলাইকে বলেন, ‘আগামী ২০ আগস্ট গ্রেপ্তার তিন আসামির জামিন শুনানির দিন নির্ধারণ করা আছে। এ ছাড়া প্রধান আসামিসহ বাকিরা এখনো আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করা হয়নি।’
হামিদুর রহমান বলেন, ‘গত ১২ আগস্ট ইয়াসির আরাফাত, জাহিদুল ইসলাম ও মো. রায়হানকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করলে তাদের প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন বিচারক। রিমান্ড শেষে গত ১৪ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে তাদের হাজির করা হলে মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শুনেছি এ মামলায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে প্রধান আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। থানা থেকে একদিন মাত্র তদন্ত কর্মকর্তা যোগোযোগ করেছেন। আর কেউ যোগাযোগ করেননি।’
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছাগল আটকানোয় অনেক লস হয়েছে। ঈদের আগের দিন অনেক কম দামে এগুলো বিক্রি করেছি। আমি ন্যায় বিচার চাই।’
মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শরীফুল ইসলাম জানান, ছাগল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম গত ১১ আগস্ট নয়জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর ৫১। মামলায় ইয়াসির আরাফাত, জাহিদুল ইসলাম ও মো. রায়হানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। র্যাব-২ ওই তিন আসামিকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, যশোরের বারোবাজার পশুরহাট ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকা থেকে গত ১১ আগস্ট সকালে মোহাম্মদপুর রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পূর্বপাশে রাস্তায় এসে পৌঁছান পাঁচজন ছাগল ব্যবসায়ী। তাঁরা একটি ট্রাকে করে ২১২টি ছাগল নিয়ে আসেন। ব্যবসায়ীরা মোহাম্মদপুরের বাবর রোড এলাকায় গেলে জহুরি মহল্লা এলাকায় তাঁদের ছাগলসহ আটকে রাখা হয়। ছিনতাইকারীরা ছাগলগুলো ট্রাক থেকে নামিয়ে একটি ক্লাবের ভেতরে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, ফারুক বিশ্বাস, মোহাম্মদ মাসুদ, বাবু খান, শেখ সোলেমান ও মো. নুরুজ্জামানকে আটকে রাখে। পরে র্যাব-২ এর একটি টহলদল জিম্মিদশা থেকে ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করে।
ব্যবসায়ীদের যখন উদ্ধার করা হয় তখন র্যাব-২ এর কমান্ডিং অফিসার পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘১১ আগস্ট অর্থাৎ ঈদের আগের দিন দুপুর ১২টার সময় ব্যবসায়ীরা প্রথমে আমাদের ফোনে খবর দেন। খবর দিয়ে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বাবর রোডে ২১২টি ছাগল ছিনতাই করে করে ট্রাকসহ আটকে রাখা হয়েছে। সে সময় মোহাম্মদপুর এলাকায় র্যাবের একটি মোবাইল টিম কাজ করছিল। পরে মোবাইল টিমসহ আমরা ঘটনাস্থলে যাই।’
মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা একটি ক্লাব ঘরের ভেতরে ছাগল ব্যবসায়ীদের আটক অবস্থায় পাই। সেখানে তিনজন ছিনতাইকারী উপস্থিত ছিল। পাশে একটি মাচা করা ট্রাকের ওপর-নিচে মিলে মোট ২১২টি ছাগল ছিল। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে আমরা ব্যবসায়ীদের ও ছিনতাইকারীদের মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করি।’