শ্যামনগরে দুই চেয়ারম্যানের সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ২০

Looks like you've blocked notifications!

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ আহত হয়েছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার বংশীপুর বাসস্ট্যান্ডে এই সংঘর্ষ হয়। এ সময় লাঠিসোঁটা ও সড়কির আঘাতে ১৩ জন আহত ছাড়াও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সাতজন। তাঁদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, দুই পক্ষের ভয়াবহ সংঘাত ঠেকাতে  ২৯টি গুলি ছুড়েছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকালে বংশীপুরে লক্ষ্মী সিনেমা হলের কাছে বিএনপি দলীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী জি. এম. সাদেকুর রহমান সাদেকের সমর্থক আসমত আলীকে মারধর করেন ঈশ্বরীপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শোকর আলীর আবদুল আলিম। এ খবর জানাজানি হতেই দুই পক্ষ লাঠিসোঁটা, সড়কি, বল্লম, রামদা চায়নিজ কুড়াল, বোমা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় গুলির শব্দও পাওয়া যায়।

এদিকে, খবর পেয়ে সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরপর ২৯টি গুলি ছুড়লে সংঘর্ষ থেমে যায়। এরপর আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় শ্যামনগর ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে।

তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আফসার আলী, আলম, আবদুস সালাম, বারেক, নূর মোহাম্মদ, আবু সাঈদ ও শফিকুলকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের শ্যামনগর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান সাদেক বলেন, লক্ষ্মী সিনেমা হলের কাছে চেয়ারম্যান শোকর আলীর সমর্থক আবদুল আলিমসহ তিনজন গাঁজা খাচ্ছিল। এতে বাধা দেন আমার সমর্থক মুজিবরসহ কয়েকজন। এই নিয়ে শুরু হয় বিরোধ ও মারামারি। পরে চেয়ারম্যান শোকর আলী ও তাঁর ভাই গোলাম মোস্তফা বাংলা ভাই হেলমেট পরে মোটরসাইকেলে বন্দুক নিয়ে এসে গুলি ছোড়ে।

অপরদিকে, চেয়ারম্যান শোকর আলী বলেন, তাঁর সমর্থক আবদুল আলিমকে সাদেকুর রহমান সাদেকের লোকজন ধরে রেখেছিল। তার প্রতিবাদ জানাতে তিনি ও তাঁর সমর্থকরা সেখানে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় সাদেকের ভাই আবদুল ওহাব নেতৃত্ব দিয়ে হামলা চালায়। এ ঘটনায় তাঁর পাঁচ সমর্থক আহত হয়েছেন।

শোকর আলী আরো জানান, শ্যামনগর উপজেলা বিএনপি সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান সাদেক সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দারের হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর থেকে তাঁর আচরণ ছিল বেপরোয়া। গত ১৫ দিন ধরে দুইপক্ষে উত্তেজনা চলছিল। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসেও এই উত্তেজনা দেখা দেয়। তারই জেরে আজ এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিসুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের কেনো পক্ষ গুলি ছোড়েনি। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই মেরুর দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে  এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ এখন পর্যন্ত মামলা করেনি।